ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রপ্তানি খাতকে চাঙ্গা করতে ৬৬৪৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ১১ নভেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রপ্তানি খাতকে চাঙ্গা করতে বিদায়ি অর্থবছরে (২০২০-২১) নগদ সহায়তা বা বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, রপ্তানির বিপরীতে ৬ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার এই সহায়তা দেওয়া হয়। বিপুল অঙ্কের এ টাকা পেয়েছেন রপ্তানিমুখী ৩৭টি গুরুত্বপূর্ণ খাতের উদ্যোক্তারা।

ইপিবির (এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো বা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো) তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ি অর্থবছরের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৭৪ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পাঁচ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানির বিপরীতে সবচেয়ে বেশি নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। সরকার থেকে নিয়ে ৪১৭ কোটি টাকা বিতরণ করে ব্যাংকটি। এরপর অবস্থান রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১ হাজার ৭ কোটি টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ২১ কোটি টাকা, উত্তরা ব্যাংক ১০০ কোটি, পূবালী ব্যাংক ৩০৬ কোটি, বেসিক ব্যাংক ৮০ কোটি, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ২৪৯ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২৪০ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ৮০ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১৬ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ১৫৪ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক ১৩২ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ১০৬ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩২৩ কোটি, এবি ব্যাংক ৭১ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ২০০ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ১০৭ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২৪৪ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ৭ কোটি, দি প্রিমিয়ার ব্যাংক ২২৬ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ১৯০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ১৮৩ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ২৫৫ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ২১৮ কোটি, দি সিটি ব্যাংক ১৯১ কোটি, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৮১ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১৩৫ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ১০৩ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ৭৬ কোটি, যমুনা ব্যাংক ৮৩ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ৯৫ কোটি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ১০২ কোটি, মিডল্যান্ড ব্যাংক ১৭ কোটি, এনআরবি ব্যাংক ৭ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ২১ কোটি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৩৪ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ১৯৫ কোটি, সিটি ব্যাংক এনএ ১০ কোটি এবং এইচএসবিসি ২৭৮ কোটি টাকার নগদ সহায়তা দিয়েছে।

রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনটি ৩০ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য ছিল। সেই অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তার হার ৪ শতাংশ।

দেশের রপ্তানিকে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ কিছু পণ্য রপ্তানি খাতকে নগদ সহায়তা বা প্রণোদনা দিয়ে থাকে সরকার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ২৬টি পণ্য রপ্তানিতে বিভিন্ন হারে সহায়তা দেওয়া হয়। সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো মোট রপ্তানির ২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তা পায়। প্রচলিত বাজারের বাইরে নতুন বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে দেওয়া হয় ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা। আবার আগর, আতর, আলু, হালাল মাংস, বৈচিত্র্যকৃত পাটপণ্য রপ্তানিতে দেওয়া হয় ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা। ২৬ ধরনের পণ্যের বাইরেও মোটরসাইকেল, টুপি, সিরামিকসহ ৯টি পণ্যে সহায়তা দেওয়া হয় ১০ শতাংশ। নগদ ঋণ সহায়তা থাকছে ৫ হাজার কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের মধ্যে সাধারণ ভর্তুকির আকার ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এই ভর্তুকিকে নগদ সহায়তাও বলা হয়। বাকি ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে পাটজাত দ্রব্য রপ্তানিতে। আগামী অর্থবছরে পাটজাত দ্রব্যে ভর্তুকি চলতি অর্থবছরের সমান রাখা হলেও পোশাকসহ অন্যান্য খাতে বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়া অন্য কোনো দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে এ হার ৪ শতাংশ এবং বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা ছিল ৪ শতাংশ। ইউরোপ অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া মেডিকেল সার্জিক্যাল যন্ত্রাংশে ১০ শতাংশ, মহিষের নাড়িভুঁড়ি ও শিং রপ্তানিতে, শাকসবজি, শস্য, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, কেমিক্যাল পণ্য, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও আইটিইএস পণ্য, সুপারি পাতার তৈরি পণ্য এবং ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি পণ্য খাতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সি ক্যাটাগরির সিনথেটিক পণ্য, ইপিজেডের অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্যে ৪ শতাংশ প্রণোদনা, হালকা প্রকৌশল খাতের মধ্যে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের ওপর ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। নতুন করে প্রণোদনার আওতায় আসা সবাইকে ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও শতভাগ কাস্টমসের আওতাভুক্ত হতে হবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়