ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

আশার আলো চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২০ এপ্রিল ২০২৪  

আশার আলো চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের

আশার আলো চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের

চট্টগ্রাম মেট্রোরেল পথের দৈর্ঘ্য হবে ৫৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। বিভিন্ন জংশনে যাত্রী ওঠানামার জন্য মোট ৪৭টি পয়েন্ট থাকবে। নগরের অভ্যন্তরে মূল শহরে চলবে মাটির নিচ দিয়ে, শহরের আশপাশে চলবে মাটির ওপরে। তিনটি রুটকে কেন্দ্র করে মেট্রোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে আগামী মাসে। এর মাধ্যমে আশার আলো দেখা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের।

বাংলাদেশ সরকার ও কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) যৌথ উদ্যোগে ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কনস্ট্র্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম মেট্রোরেল বাস্তবায়নে সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মোজাম্মেল হককে আহ্বায়ক করে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে চসিক, চউক, চবি, চুয়েট, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), এলজিইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি রাখা হয়। সবাইকে নিয়ে গত ৩ এপ্রিল চসিকের সম্মেলন কক্ষে একটি সমন্বয় সভা হয়। সভায় ‘আগামী মে মাস থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নগরের কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর, সিটি গেট থেকে নতুন ব্রিজ এবং অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গিবাজার- এই তিনটি রুটকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এই তিন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ হবে।

চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনীয় দাফতরিক কাজ শেষ। আগামী মে মাস থেকে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হবে। এটি চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। মেট্রোরেল হলে নগরীর অভ্যন্তরে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মোজাম্মেল হক বলেন, শিগগিরই মেট্রোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। নগরের অভ্যন্তরের মূল শহরে মাটির নিচে এবং আশপাশে মাটির ওপরে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্দেশ্য নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলবে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, মেট্রোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ৬২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত। তবে আগামী মাসে কাজ শুরু হলে শেষ করতে ৩-৪ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। এটি বাস্তবায়িত হলে নগরের যানজট হ্রাস ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব মেট্রো সিস্টেম চালু করা হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ডিটিসিএ, চউক ও চসিকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের বসবাস। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামে শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান প্রসার হচ্ছে। এর সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। ফলে চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিবহন ব্যবস্থার ওপর চাপ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রাফিক জ্যাম, দুর্ঘটনা, বায়ুদূষণ ইত্যাদি সমস্যা বেড়ে চলছে। ফলে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। জানা যায়, চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ও চট্টগ্রাম বন্দর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। চউক ১৯৯৫ সালে নগরের ট্রাফিক ও পরিবহনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কৌশল একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। পরে চসিক এমআরটি লাইন স্থাপনের জন্য একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করে। কিন্তু সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় মেট্রোরেল ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে পাশাপাশি চট্টগ্রামেও করার নির্দেশনা দেন। এরপর থেকে গতি পায় চট্টগ্রাম মেট্রোরেল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়