ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

বিশ্বের শীর্ষ ৫০ রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৪ জুলাই ২০২২  

চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রথম ১১ মাসেই পুরো অর্থ বছরের রপ্তানির লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই অর্থ বছরে রপ্তানি লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্য মাত্রা পূরণের পর আশা করা হচ্ছিলো রপ্তানি ছাড়াবে ৫ হাজার কোটি (৫০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। জুন মাস শেষ হতে বাকি আরো দুদিন। তবে তার আগেই চলতি অর্থবছরের ১১ মাস (জুলাই-মে) বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৪৭ বিলিয়ন (৪ হাজার ৭০০ কোটি) ডলারেরও বেশি।

বিভিন্ন পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, জ্বালানি তেল রপ্তানিকারকদের হিসাবে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৫০ রপ্তানি কারক দেশের একটি। এশিয়ায় এ অবস্থান দাঁড়ায় শীর্ষ ২০-এর মধ্যে। এদিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এখন ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান।

চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য, যার মধ্যে তৈরি পোশাকপণ্য রপ্তানির অর্থ মূল্য ছিলো ৩ হাজার ৮৫২ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ হিসেবে রপ্তানি হওয়া পণ্যের প্রায় ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক।
 
এদিকে সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী অর্থ বছরে শুধু পোশাক খাতের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে মোট ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি লক্ষ্য ধরা হয়েছিলো, যা এরই মধ্যে ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। ন্যুনতম ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে আগামী অর্থ বছর রপ্তানি ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়াতে পারে। সে হিসাবে আগামী অর্থ বছরের জন্য এর কাছাকাছি পরিমাণে লক্ষ্য নির্ধারণ হবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বলেন, জাতীয় উন্নয়নে রপ্তানি খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এ পর্যন্ত যথেষ্ট ভালো করেছে। চলতি অর্থ বছর শেষে রফতানি দাঁড়াতে পারে ৫৮ বিলিয়ন (৫ হাজার ৮০০ কোটি) ডলারে। এর মধ্যে পণ্য খাতে হবে ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) আর সেবা খাতে ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের মাধ্যমেই রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া অনেক বড় অর্জন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে জাতি হিসেবে আমাদের অর্জন এবং গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অবদান এখন আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচিত। অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের অন্যতম প্রধান খাত পোশাক ও বস্ত্র শিল্প। সামষ্টিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ শিল্পের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া বাঞ্ছনীয়।

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শীর্ষ তিন পণ্য-পোশাক, পাট ও পাটজাত এবং চামড়া ও চামড়া জাত পণ্য। ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশের মোটর রপ্তানির ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ জুড়েই ছিল পণ্য তিনটি। এ আধিপত্য বজায় রয়েছে চলতি অর্থ বছরেও। তবে মোটর রপ্তানিতে বড় অবদান রাখা পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে হোম টেক্সটাইল। চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রথম ১১ মাস শেষে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল ৪১ দশমিক ৩ এবং চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য রপ্তানিও বেড়েছে ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানি কমেছে ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পণ্য রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই অর্থ বছর শেষে মোট রপ্তানি আরো বেশি হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়