ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

স্কটল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার আগে জেনে নিন কিছু জরুরি তথ্য

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১ ডিসেম্বর ২০২০  

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ইতিহাস ও বিপুল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ একটি দেশ হলো স্কটল্যান্ড। ছোট একটি জাতি হলেও স্কটল্যান্ড ইতিহাসের কালক্রমে আধুনিক বিশ্বের উপর এক বিরাট প্রভাব ফেলে আসছে। 

জানেন কি? স্কটল্যান্ড একাডেমিক গবেষণা ও নতুনত্বের অন্যতম কেন্দ্র। এ কারণেই এই দেশের কদর রয়েছে বিশ্বব্যাপী। প্রতিবছর হাজারো শিক্ষার্থীরা দূরের দেশ থেকে স্কটল্যান্ডে পড়ালেখা করতে যায়।

স্কটল্যান্ড আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের, বিশেষত স্নাতকোত্তর গবেষণায় আগ্রহীদের জন্য ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় গন্তব্য। স্কটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুলটাইম মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রিধারী ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী দেশের বাইরে থেকে আসে।

অনেকেই ভাবতে পারেন, কী কারণে স্কটল্যান্ডে পড়তে যাব? তাদের জন্য স্কটল্যান্ডে উচ্চতর অধ্যয়নের পেছনে রয়েছে অনেক যৌক্তিক কারণ। বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষা নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ‘মাস্টারস্টাডিজ’ উচ্চশিক্ষার জন্য স্কটল্যান্ডকে বেছে নেয়ার পেছনে আটটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে-

> স্কটল্যান্ডে আছে বিশ্বসেরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। টাইমস হাইয়ার এডুকেশনের জরিপে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় আছে স্কটল্যান্ডের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। এদের মধ্যে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় আছে সবার ওপরে, পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আছে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়, এর্বার ইউনিভার্সিটি ও সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়।

> স্কটল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল পরিমাণে উদ্ভাবনী গবেষণা হয়। উদাহরণস্বরূপ- সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ ও স্নাতক শিক্ষার্থীরা যক্ষ্মা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো বায়ুবাহিত রোগের বিস্তারকে কমানো নিয়ে কাজ করছেন। অন্যদিকে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদাহ গবেষণা কেন্দ্রের ১৫০ গবেষকের একটি দল কোভিড-১৯ এর দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদী প্রভাবগুলির চিকিত্সার জন্য পরীক্ষামূলক ওষুধ পরীক্ষা করছে। 

> এই দেশটিতে রয়েছে এগিয়ে যাওয়ার বিস্তর সুযোগ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের ৯০ ভাগ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বলছেন, তারা তাদের শেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে খুব সন্তুষ্ট। যাদের মধ্যে ৮২ ভাগ স্নাতক তাদের ডিগ্রি নিয়ে খুশি ও ৮৩ ভাগই স্নাতক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই পড়াশোনার সসঙ্গে প্রাসঙ্গিক শিল্পে কর্মসংস্থান পেয়েছেন। 

> ‘অ্যাডা স্কটল্যান্ড ফেস্টিভালট’ নামে উৎসবে দেশটিতে বর্তমান লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা তুলে ধরে একাধিক ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তারা কম্পিউটিং ও অন্যান্য বিষয়গুলিতে আগ্রহী নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিকারের সুযোগের দিকে নজর দেয়। গত বছরের অক্টোবরে স্কটিশ শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে আরও বেশি নারী অংশগ্রহণ বাড়াতে উদ্যোগী হন।

> স্কটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত এমন উচ্চদক্ষ স্নাতক তৈরিতে প্রচুর জোর দেয়। কলেজগুলো ক্লাসের আকার যথাসম্ভব ছোট রাখে, শিক্ষার্থীদের প্রভাষকদের সঙ্গে একযোগে আরও সময় কাটাবার সুযোগ দেয়। প্রভাষকরা শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরামর্শ প্রদান করে, মৌলিক তাত্ত্বিক ধারণাগুলি বোঝার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

> সাংস্কৃতিক বৈচিত্রে পূর্ণ স্কটল্যান্ড। স্কটল্যান্ডে আছে ২৫০ এর বেশি জাদুঘর ও ১০০ টিরও বেশি গ্যালারি। মেডিকেল শিক্ষার্থীরা সময় কাটাতে পারেন সার্জনস হল জাদুঘরে। এমন অসংখ্য সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক বৈচিত্রে ঠাসা এক দেশ স্কটল্যান্ড।

> স্কটল্যান্ডে বিশ্বের অন্যন্যি দেশের অনেক মানুষের বাস। এ কারণেই নানা বৈচিত্রের মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পাওয়া যায়। যদিও স্কটল্যাণ্ডের নিজস্ব ভাষা রয়েছে তবু সেই ১৮ শতক থেকে ইংরেজি দেশটির প্রভাবশালী ভাষা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফলে খুব সহজে দেশটির মানুষের সাথে বিদেশি শিক্ষার্থীরা মিশে যেতে পারে ও বন্ধুত্ব করতে পারে। 

> স্কটল্যান্ড প্রাকৃতিক বৈচিত্রের এক লীলাভূমি। জানেন কি? যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় পর্বতের অবস্থান স্কটল্যান্ডে, পর্বতটির নাম বেন নেভিস। এটির উচ্চতা ৪ হাজার ৪০৯ ফুট। প্রায় ৮০০ টি দ্বীপ নিয়ে স্কটল্যান্ড গঠিত, এর মধ্যে মাত্র ১০০ টিতে স্থায়ী মনুষ্য বসতি রয়েছে। স্কটল্যান্ডে প্রায় ৩০০০ রাজপ্রাসাদ রয়েছে। অর্থাৎ দেশটির প্রতি ১০০ বর্গমাইলে গড়ে একটি রাজপ্রাসাদ বিদ্যমান।  

এছাড়াও স্কটল্যান্ডের সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর। দেশটিতে আছে বৃটেনের বেশ অনেকটুকু ‘ড্রাই স্কাই পার্ক’ যা জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য তীর্থস্থান। শুধু এই কারণগুলোই নয়, স্কটল্যান্ডে শিক্ষার্থী হিসেবে গেলে পাবেন অনেক সুযোগ-সুবিধা। আর এসব কারণেই শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বর্তমানে বেছে নিচ্ছে স্কটল্যান্ডকে।

সূত্র: মাস্টারস্টাডিজ

সর্বশেষ
জনপ্রিয়