রোমান্স করা যাবে মেটাভার্সে!
জাকারিয়া স্বপন
ছবি: সংগৃহীত
'মেটাভার্স দিয়ে কি রোমান্স করা যাবে?' গত সপ্তাহে বিবিসিতে মেটাভার্স নিয়ে আমার ছোট একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ ও রেডিওতে সম্প্রচার হওয়ার পর আমি যে প্রশ্নটির সবচেয়ে বেশি মুখোমুখি হলাম তা হলো এটি।
আমি তাদের মনের কথাটা বুঝতে পারি। যারা এ মুহূর্তে এই লেখা পড়ছেন, তারাও বুঝতে পারছেন রোমান্স দিয়ে আসলে তারা কী অর্থ বোঝাতে চাইছেন। আমি তো আর তাদের মনোবাসনাকে হতাশ করতে পারি না। আমি অকপটে জবাব দিলাম, 'অবশ্যই। এবং আপনি যাকে চাইবেন, তাকেই পাবেন।'
আমার এই জবাবে অনেকেই ঢোক গিলে। এতটা সরাসরি উত্তর হয়তো আশা করেনি। তার নার্ভাসনেস দেখে আমি আরও বলি, 'ধরুন, আপনার ক্লিওপেট্রাকে প্রয়োজন। বোতাম চাপামাত্রই আপনার সামনে এসে হাজির হবে। সঙ্গে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আপনি যেভাবে চাইবেন, সেটা সে নিজে থেকেই বুঝে ফেলে আপনাকে তৃপ্ত করবে। পারফেক্ট পার্টনার। শুধু আপনাকে একটু বেশি পয়সা দিতে হবে, এই আর কি!'
এর ভেতরও কিছু অতি উৎসাহী মানুষ থাকে। তারা বলে, 'ধুর, টাকা কোনো বিষয় না। তাকে সত্যি সত্যি পাওয়া যাবে কিনা, সেটাই হলো কথা! আসলেই পাওয়া যাবে? আমি কি তাকে ছুঁতে পারব?'
আজকাল ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও অনেকটা এগিয়েছে। একজন মেসেঞ্জারে প্রশ্ন করল, 'ভাইয়া, আমি কি আপনার সঙ্গে মেটাভার্স করতে পারব?'
আমি বললাম, 'যখন চালু হবে, পারবেন নিশ্চয়ই!'
তখন সে পাল্টা প্রশ্ন করল, 'আপনার সঙ্গে ডেট করতে পারব?'
আমি হো হো করে হেসে দিয়ে বললাম, 'পারবেন'। তিনি আমার হাসিটা দেখতে পাননি যদিও!
মেটাভার্স নিয়ে উত্তাপ ছড়াতেই মানুষ সবচেয়ে বেশি জানতে চাইছে, এই প্রযুক্তি তাকে আরেকটা মানুষের কাছাকাছি এনে দেবে কিনা? যদি এনেই দেয়, তাহলে কতটা? সেটা কি বাস্তবের মতোই হবে? স্পর্শ করা যাবে? অনুভব করা যাবে? কেমন হবে সেই অনুভূতি?
২.
গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই মেটাভার্স শব্দটি এই গ্রহের সবচেয়ে আগ্রহের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও শব্দটি এই মুহূর্তে সকলের মুখে মুখে, কিন্তু এই শব্দটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯২ সালে, যখন নিল স্টিফেনসন তার বিজ্ঞান কল্পকাহিনি 'স্নো ক্র্যাশ' বইতে এর প্রচলন করেছিলেন।
সেটি মূলত একটি থ্রিডি ভার্চুয়াল জগৎ। তারপর আমাদের গেমগুলো যখন আরও বাস্তবধর্মী হয়ে উঠল, তখন অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন এই গেমগুলো কতটাই জীবন্ত। ওখানে গুলি করে একজনকে মেরে ফেললে আরেকজনের বুকে যে ব্যথা তৈরি হয়, সেই কান্না কি বাস্তবের বেদনা থেকে কম?
যারা ওই গেমিং জগতের সঙ্গে পরিচিত, তারা অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, তাহলে পৃথিবীটা অনেকটাই ম্যাট্রিক্স মুভির মতো হয়ে যাবে? যারা আবার ম্যাট্রিক্স মুভিটি দেখেছেন, তারা হয়তো এখন ভাবছেন, 'দেয়ার ইজ নো স্পুন!'
বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লেখকদের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদের সময় এটি। তারা হয়তো এমন একটি গল্প ফেঁদে বসেছেন এই ভেবে যে, পাঠককে তো একটা ভালো কল্পনার জগতে ঠেলে দেওয়া গেল! কিন্তু এত স্বল্প সময়েই প্রযুক্তি সেই কল্পকাহিনিকে বাস্তবে রূপ দিয়ে ফেলবে, সেটা বেশিরভাগ লেখকই বুঝে উঠতে পারেননি। ৩০ বছর আগে যে ভার্চুয়াল পৃথিবীর কথা লেখক কল্পনা করেছিলেন, সেটা এখনই ঘটতে যাবে- তা আমরা বেশিরভাগ মানুষই ভাবতে পারিনি। তবে বিষয়টি যে ঘটতে যাচ্ছে, সেটা টের পাওয়া যাচ্ছিল। হয়তো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় গেলে আরও ২০ থেকে ৩০ বছর লাগত। কিন্তু প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে এটিকে পুশ করছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের ভেতরেই এর প্রচলন শুরু হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
সবচেয়ে বড় পুশটি এসেছে গত সপ্তাহেই ফেসবুকের কাছ থেকে। তারা এ খাতে এতটাই পুশ করছে যে, তাদের মূল প্রতিষ্ঠানের নামটি পর্যন্ত পরিবর্তন করে 'মেটা' করে ফেলেছে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিশাল একটি ঝুঁকি নিয়ে ফেলেছে। যদি তারা এ কাজে সফল না হয়, তাহলে পুরো প্রযুক্তিটি আপাতভাবে একটি 'হাইপ' হিসেবেই গণ্য হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মাঝেমধ্যে হাইপ যে তৈরি হয় না, তা নয়। মাঝেমধ্যে মিডিয়াগুলো এমনভাবে একটি প্রযুক্তিতে হাইলাইট করে, দেখে মনে হবে পুরো বিশ্ব বুঝি পাল্টে দেবে এটা। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, সেটা তেমন সফলতা পায়নি। তেমনি একটা হাইপের কথা মনে পড়ছে এখন- ব্যাটারিচালিত দু'চাকার ছোট স্কুটার। দু'পাশে দুটো চাকা- একজন মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে চালিয়ে নিতে পারে। বিমানবন্দরে পুলিশ এগুলো আজকাল খুব ব্যবহার করে। যখন এই প্রযুক্তি প্রথমে দেখানো হয়েছিল, তখন ভাবা হয়েছিল, এটা করে মানুষ মূল সড়কে যাতায়াত করবে। তাতে ট্রাফিক জ্যাম একদম কমে যাবে। কিন্তু মানুষ সেটা করেনি।
সেই হিসেবে ফেসবুক (নতুন মেটা) বিশাল একটি ঝুঁকি নিয়েছে বৈকি! ধরুন, আমরা সবাই মিলে আজ যত হইচই করছি, সেটা ঠিকমতো কাজ করল না- তখন?
৩.
মেটাভার্স আমাদের জীবনে যেসব জায়গায় সবচেয়ে আগে প্রভাব ফেলবে, সেগুলো নিয়ে একটু কথা বলা যেতে পারে।
ক. শিক্ষা :ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এরই মধ্যে আমরা অনেকেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বিশেষ করে কভিডের সময় অনলাইন শিক্ষা আমাদের ঘরে ঢুকে গেছে। যে ছেলেমেয়েগুলো অনলাইনে ভালো ক্লাস করতে পারেনি, তারা অনেক পিছিয়ে গেছে। অনেক ছাত্রছাত্রীর জীবন থেকে দুটি বছরের মতো হারিয়ে গেছে। মেটাভার্সে ক্লাস হবে একদম সত্যিকারের ক্লাসরুমের মতো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্যিকারের ক্লাসরুমের থেকেও ভালো।
যেমন ধরুন, আপনি ডাক্তারি পড়ছেন। একটা অপারেশন থিয়েটারে আপনাকে শেখানো হবে। মেটাভার্সে আপনি নিজের চোখে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সেই অপারেশন দেখতে পারবেন; এবং সেই ক্লাস হয়তো নিচ্ছে আমেরিকার বিখ্যাত জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়। পদার্থবিদ্যার কোনো থিওরি হয়তো অনেক ল্যাবে করা যাবে না। মেটাভার্সে খুব সহজেই তা ঘটানো যাবে। মানুষ জ্ঞানের দিক থেকে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এই মেটাভার্সে যে থাকবে না, সে থেকে যাবে পুরোনো দুনিয়ায়। জ্ঞানের ও চিন্তার দূরত্ব আরও বেড়ে যাবে বৈকি!
খ. কাজের পরিধি :আমাদের ঘরে বসে অফিস করার বিষয়টি বছর তিনেক আগে কাউকে বললে সে হাসতে হাসতে মারা যেত। ভাবত, এমন বোকা অফিসও এই গ্রহে আছে নাকি! কিন্তু এখন নিশ্চয়ই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, অসংখ্য অফিস তাদের কর্মীদের চিরদিনের জন্য বাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। তাহলে বিষয়টি কেমন হলো?
নিশ্চয়ই এই কাজ দুনিয়ার তাবৎ প্রতিষ্ঠান করবে না। শতকরা ১০ ভাগ প্রতিষ্ঠানও যদি করে, তাহলে সারা পৃথিবীতে কতটা পরিবর্তন খেয়াল করে দেখেছেন? মেটাভার্সের কারণে সেই অফিস করাটা হবে অনেক বেশি জীবন্ত। জুমে বসে অনলাইন অফিস নয়। আপনার মনে হবে, আপনি ঠিক আপনার আগের অফিসে বসেই কাজ করছেন। আপনার ঠিক পাশেই বসে কাজ করছেন অন্য সহকর্মী। ঘাড় ঘোরালেই তার সঙ্গে চোখাচোখি হবে। আপনি বারবার তার দিকে তাকাচ্ছেন দেখে, সে একটা বাঁকা হাসিও দিতে পারে।
গ. অনলাইন কেনাকাটা :এখন আমরা যেভাবে অনলাইনে পণ্য কিনি, সেটা একদম পাল্টে যাবে। ফেসবুকে এখন অনেকেই লাইভ করে শাড়ি কাপড় বিক্রি করেন এবং তাদের সংখ্যা কিন্তু অনেক। এখন যা হবে তা হলো- মেটাভার্সে একটা লাইভ হবে, আপনি সেখানে যুক্ত হলে যিনি লাইভ করছেন, তার সামনেই চলে যাবেন। চাইলে কাপড়টি নিজে একটু পরেও দেখতে পারবেন। পছন্দ হলে তখনই কিনে নিতে পারেন। দোকানে গিয়ে ঘুরতে যেমন লাগে, মেটাভার্সেও তাই হবে।
ঘ. কনসার্ট :সম্প্রতি বিখ্যাত গেম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইপিক গেমসের ফোর্টনাইটের এক ভার্চুয়াল কনসার্টে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডে, যাতে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নিয়েছে বলে এপিক গেমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একবার চোখ বন্ধ করে দেখেছেন, কনসার্ট কোথায় চলে গেছে? এটা কিন্তু শুধু এমন কনসার্ট নয় যে আপনি ঘরে বসে থ্রিডি একটি লাইভ শো দেখছেন। আপনি ওখানে কিন্তু শিল্পীর সঙ্গে নাচতেও পারবেন। একসঙ্গে কয়েক লাখ মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে একটি লাইভ কনসার্টে এভাবে যুক্ত হচ্ছে, এটা ভাবতেই শরীরের লোমকূপ দাঁড়িয়ে যাচ্ছে!
ঙ. সিনেমা :নেটফ্লিক্সের যুগে সিনেমা এমনিতেই অনেক পাল্টে গেছে। এখন যদি এর ভেতর দেওয়া হয় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি, তখন তো আপনি ওই মুভির ভেতর একটি ক্যারেক্টার হয়ে যেতে পারেন!
পাশাপাশি গেমিং শিল্প, কমিউনিকেশন, মিটিং, টেলিভিশনের সংবাদ, টক শো- সবকিছুই পাল্টে যাবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই। এটাই ঘটতে যাচ্ছে।
৪.
অনেকের কাছেই এটা একটা জটিল চিন্তা যে, এমন একটা ভার্চুয়াল পৃথিবী কীভাবে তৈরি হয়ে যাবে? আসলেই কি এমন পৃথিবী টিকে যাবে? কী দিয়ে তৈরি হবে এমন এক দুনিয়া, যা ইন্টারনেটকেও পিছিয়ে দিতে পারে?
মেটাভার্স ইন্টারনেট নয়, যদিও ইন্টারনেট এর একটি অংশ। এর আরও অনেক অঙ্গ রয়েছে, যেমন- ভিডিও কনফারেন্সিং, ক্রিপ্ট কারেন্সি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, লাইভ স্ট্রিমিং, দ্রুতগতির কানেক্টিভিটি, এভাটার, ভার্চুয়াল ইকোনমি, নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, বিশ্বাস- এমন আরও অসংখ্য বিষয়ের সমন্বয় রয়েছে এই মেটাভার্সে।
এর প্রতিটি অঙ্গই খুব ক্রিটিক্যাল। সবচেয়ে আশার কথা হলো, এর বেশিরভাগ অঙ্গ এরই মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। এবং কিছু কিছু প্রযুক্তি এতটাই এগিয়ে গেছে, যার ওপর ভিত্তি করে মেটাভার্স দুনিয়া তৈরি করা সম্ভব। এটাই হয়তো ২০ বছর আগে সম্ভব ছিল না।
অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে নতুন নতুন অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করছে, যারা 'পোকেমন গো' গেমটি খেলেছেন তারা জানেন, সেই গেম কীভাবে আপনার চারপাশ ভার্চুয়াল দুনিয়া তৈরি করতে পারে! এখন এমন অনেক প্রতিষ্ঠান এ খাতে বিনিয়োগ করছে। ফলে একটি ইকোসিস্টেম তৈরি হয়ে যাবে, যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে আমরা থ্রিডি দুনিয়ায় প্রবেশ করে যাব।
তবে বিষয়টি তো এমন নয় যে, একটি বোতাম চাপলাম আর সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেল। এই পরিবর্তন হলো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমরা এই প্রক্রিয়ার পথেই হাঁটছিলাম। উত্তেজনা শুধু এটুকুই যে, গতিটা অনেক দ্রুত হয়ে গেল। এখন হয়তো আমিও এই প্রযুক্তিটির ছোঁয়া উপভোগ করে যেতে পারব।
৫.
নতুন প্রযুক্তির কথা এলেই দুটি বিষয়কে টেনে আনতেই হয়। একটি হলো- এর কোনো ঝুঁকি আছে কিনা। আরেকটি হলো- বাংলাদেশ এর সঙ্গে কীভাবে তাল মেলাবে?
প্রথমেই শেষের বিষয়টি বলি। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির এমন কোনো দেশ নয়, যাকে নিয়ে মূলধারার প্রতিষ্ঠানগুলো ভেবে থাকে। সামগ্রিক অর্থে বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্যাপাসিটিই নেই। এটা শুনতে একটু রূঢ় মনে হলেও, এটাই সত্যি। সত্যি কথা অনেক সময় খুব কঠিন হয়। এটা নিয়ে যারা তর্ক করতে আসেন, তারা হয়তো বিষয়টি বুঝতেই পারেন না; নয়তো বুঝেও সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য লাফালাফি করেন।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। তাই মেটাভার্স নিয়ে এ দেশের তেমন কিছু করার ক্যাপাসিটি নেই। যখন পুরো পৃথিবীতে এটা আসবে, তখন অন্য দেশের মতো আমরাও হয়তো কিছুটা পাব (আমরা এখনও ভালোমতো ফোরজি ইন্টারনেট পাইনি)। এবং যেদিন কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে আমরাও পাব, সেদিন আমরা এটা পেয়েছি বলে গর্ব করব, যেভাবে আমরা গর্ব করি গুগল কিংবা ফেসবুক বাংলাদেশে ছোট একটি অফিস খুলবে সেটা ভেবে।
তবে এই প্রযুক্তিটির ঝুঁকি আছে। এটা যেহেতু অনেক কিছুই ফান্ডামেন্টালি পাল্টে দেবে, তাই একটা জেনারেশন ধাক্কা খাবে। যারা ফিল্মের ক্যামেরা থেকে বর্তমানের তিন ক্যামেরার মোবাইল নিয়ে ফটোগ্রাফি করেন, তাদের যেমন একটা পরিবর্তন, তেমনি এই মেটাভার্স পাল্টে দেবে কোটি মানুষের জীবন। একটু বয়স্করা ঝামেলায় পড়ে যাবেন। তাদের সন্তানরা মেটাভার্সে অনেক বেশি সময় কাটালে ভয় পাবেন, তাদের সন্তানরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে উৎকণ্ঠায় ভুগবেন। কেউ কেউ সন্তানদের মারধরও করবেন। এর ফলে অনেক সামাজিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটবে।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, সম্প্রতি ফেসবুকের প্রাক্তন ডাটা সায়েন্টিস্ট ও সিভিক ইন্টেগ্রিটি ইউনিট ম্যানেজার ফ্রান্সেস হাউগেন জানিয়েছেন যে, এক ইনস্টাগ্রামের কারণেই ৩২ শতাংশ কিশোরী নিজেদের শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে। এমন আরও অজস্র নেতিবাচক দিক আছে।
তবে এই পুরো প্রক্রিয়ায় পৃথিবী আরও কাছাকাছি চলে আসবে। চাইলেই মানুষ মেটাভার্সে ঢুকে গিয়ে নিজের প্রাত্যহিক জীবন থেকে ছুটি নিতে পারবে। এবং সেখানে কাটানো সময়ের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকবে- যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। পরিবর্তনশীল এই গ্রহে বর্তমানে শুধু এটুকুই বলা যায়, মেটাভার্স কত মানুষের যে ঘর ভাঙবে, সেটা জাকারবার্গ নিজেও জানেন না!
তখন হয়তো ঘরের সংজ্ঞাটাই নতুন করে ভাবতে হবে আমাদের!
- বছরের ২য় চন্দ্রগ্রহন আজ
- রকেটের গতিতে ইন্টারেট দেবে আল্ট্রা ব্রডব্যান্ড
- ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধি-বিধান মানার আহ্বান: মোস্তাফা জব্বার
- তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের নতুন বিপ্লব
- সরকারি উদ্যোগে কোরবানির পশুর ডিজিটাল হাট
- টাকা দিয়ে দেখতে হবে ফেসবুক লাইভ!
- আইফোন ১৩ অর্ডার করে পেলেন আইফোন ১৪
- ফাইভ-জি চালু করলো রবি
- ফেসবুকে যুক্ত হলো ‘কেয়ার’ রিঅ্যাকশন
- ফোনে চার্জ শেষে সকেটে চার্জার লাগিয়ে রাখা উচিত?