ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মৎস্য চাষ ও ক্যাপসিকামে নতুন প্রযুক্তি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৭ জানুয়ারি ২০২১  

নিজের ক্যাপসিকাম ক্ষেতে বেলাল আহমদ ইমরান

নিজের ক্যাপসিকাম ক্ষেতে বেলাল আহমদ ইমরান

যারা স্বপ্ন দেখেন দুনিয়া জয়ের এবং প্রতিনিয়ত মন থেকে উস্কানি পান নতুন কিছু করার, তারা জানেন, থেমে নেই তারুণ্যের জয়গান। থমকে যাওয়া সময়েও তরুণরা নানা উদ্যোগ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সারাদেশ থেকে এমন অসংখ্য উদ্যোগ আর সাফল্যের কথা আমাদের জানাচ্ছেন তরুণরা। চারটি আলোজ্বলা উদ্যোগ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন...

২০০৭ সালের কথা। ছবি তোলার জন্য ময়মনসিংহ গিয়ে একটি মাছের খামার দেখে চমকে ওঠেন ইমরান। ফটোগ্রাফির স্বপ্নে বিভোর ইমরান ট্র্যাক বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। ফিরে আসেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানা গ্রামে। এখানেই বেলাল আহমদ ইমরানের বাড়ি। নিজেদের ৬৫ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন মাছের খামার। একই বছরের শেষের দিকে ড্রিম হ্যাচারি ও ফিশারিজ নামে পোনা উৎপাদন শুরু করেন। এরপর সিলেটে তিনিই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করেন।

এ ছাড়া শিং-মাগুর মাছের একমাত্র হ্যাচারিটিও তার। শিং ছাড়াও পাবদা, মাগুর এবং টেংরা চাষ করেন ইমরান। নিজের কাজ নিয়ে ইমরান বলেন, '২০১৩ সালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শহীদুল ইসলাম বিশ্বনাথে ক্যাপসিকামের একটি প্রদর্শনী করেন। তার প্রদর্শনী দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্যাপসিকাম ও নাগা মরিচ চাষ শুরু করি। প্রথম বছর এক বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করি, যার উৎপাদন ব্যয় হয় ৭০ হাজার টাকা আর বিক্রি করি ৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।' ইমরানের সাফল্যে অনেক তরুণ ঝুঁকছেন কৃষি খামারে। তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কৃষিতে এসে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন অনেকে।

ইমরান নিজের কাজ সম্পর্কে আরও বলেন, 'আমি বায়োফ্লক ফিশ ফ্যাক্টরি তৈরি করেছি। ২০ হাজার লিটার পানিতে ১ হাজার ১০০ কেজি দেশি মাগুর মাছ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। আমার বায়োফ্লক ফিশ মাছ কারখানায় আধুনিক ও প্রকৃতিনির্ভর প্রযুক্তি সংযোজন করেছি। এর ফলে প্রতি কেজি মাগুর মাছ উৎপাদন খরচ হয় মাত্র ৫১ টাকা; যা শতভাগ বিদেশে রপ্তানিযোগ্য। মাছের খাবার হিসেবে বাজারের কোনো ফিড ব্যবহার করছি না আমি। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে উৎপাদিত মাছ গতানুগতিক মাছ চাষের চেয়ে ৪০ গুণ বেশি উৎপাদিত হয়।'

প্রতিদিন তার বায়োফ্লক মাছের কারখানা দেখতে আসেন মানুষ। ইমরান ২০২১ সালে ৪৮ লাখ লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাংক স্থাপন করতে যাচ্ছেন তার বায়োফ্লক মাছ কারখানায়। এতে অটোমেশন পদ্ধতিতে মাত্র ৬ বিঘা জমি থেকে মাগুর মাছ উৎপাদিত হবে বছরে ৫৭৬ টন। তার মতে, 'এটিই হবে বিশ্বের মাছ উৎপাদনের মডেল!' ইমরানের অর্জনও কম নয়। মৎস্য চাষে অবদানের জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষিপদক-২০১৩, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০১৬ ও জেলা ও উপজেলা থেকে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়