ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মেট্রোরেলের পথের এমন দৃশ্য চোখে পড়বে সবার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৬, ২২ অক্টোবর ২০২০  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোরেলের জন্য মূল সড়ক থেকে প্রায় ১৩ মিটার উঁচুতে বসছে রেললাইন। চলছে স্টেশন নির্মাণের কাজ। বিদ্যুৎ-সংযোগের জন্য খুঁটিও বসে গেছে। এগুলো মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞের অংশ। শুধু পল্লবী নয়, এর আগে-পরে প্রায় ১২ কিলোমিটার মেট্রোরেলের পথের এমন দৃশ্য চোখে পড়বে সবার। ১০ অক্টোবর প্রকল্প এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, নানা কাজে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। কেউ রেললাইন বসানোর কাজ করছেন, কেউ করছেন রেলের ডিপোর বিভিন্ন ভবনের সজ্জার কাজ। কাউকে কাউকে দেখা গেল, বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা স্থাপনের কাজে ব্যস্ত।

রাজধানীর যানজট কমাতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উড়ালপথে ২০.১০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে। এখন আগারগাঁও থেকে উত্তরার (উত্তর অংশ) দিকে এগোলে মেট্রোরেলের অনেকটাই দৃশ্যমান। তবে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত (দক্ষিণ অংশ) কাজ ততটা এগোয়নি। এই অংশে খুঁটি উঠেছে। কিন্তু উড়ালপথ দৃশ্যমান হয়নি। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মেট্রোরেল চালুর কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর কাজ ছয় মাস পিছিয়েছিল। এবার করোনার প্রভাবটা আরও সুদূরপ্রসারী, শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর থেকে। এখন প্রকল্পের কাজে যুক্ত বিদেশি নাগরিকেরা ধীরে ধীরে আসছেন। তবে শীতে করোনার প্রভাব বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

মেট্রোরেলের ১১.৭৩ কিলোমিটার পড়েছে রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে। শুরুটা উত্তরায়। সেখানে মেট্রোরেলের ডিপো গড়ে তোলা হচ্ছে ৫৯ একর এলাকাজুড়ে। ডিপোর ভেতরে রয়েছে ছোট-বড় ৫২টি ভবনসহ নানা স্থাপনা। কিছু ভবন পুরোপুরিই প্রস্তুত, দেয়াল লাল টাইলসে মোড়ানো হয়েছে। কোনোটায় চলছে টাইলস স্থাপনসহ অন্যান্য সজ্জার কাজ। অফিসসহ নানা কাজে এসব ভবন ব্যবহৃত হবে।

ডিপোর ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের দুটি ছাউনি। একটি ছাউনির নিচে রয়েছে মেরামত কারখানা। অন্য ছাউনির নিচে থাকবে ট্রেন। দুটি ছাউনির ভেতরে প্রয়োজনীয় যন্ত্র-অবকাঠামো বসানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে স্টেশন থেকে ডিপোতে আসা-যাওয়ার দুটি রেললাইনও বসানো হয়েছে।

উত্তরায় থাকছে মেট্রোরেলের তিনটি স্টেশন। প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর ডিপো থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে। স্টেশনে এখনো সিঁড়ি বসেনি। অস্থায়ী সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠেই বিরাট হলরুম দেখা গেল, যা লম্বায় ১৮০ মিটার আর চওড়া ৩৩ মিটার। এর নাম কনকোর্স হল। যাত্রীরা সিঁড়ি, এস্কেলেটর ও লিফটে চড়ে কনকোর্স হল থেকে টিকিট কাটবেন। এর এক তলা ওপরে ট্রেনে চড়ার প্ল্যাটফর্ম। স্টেশনের ছাউনির কাজ শেষ হয়নি। তবে প্ল্যাটফর্মের কাজ অনেকটাই শেষ। স্টেশনে চারটি রেললাইন বসানোর জন্য রেলের পাত জোড়া দিয়ে রাখা হয়েছে।

সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সার্বিক কাজের অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন। করোনা পরিস্থিতিতে কাজের গতি কম। ১ হাজার বিদেশির মধ্যে ৬০০ এসেছেন। দ্বিতীয় স্টেশন উত্তরা সেন্টার মিরপুর ডিওএইচএস ও উত্তরার ডিপোর ঠিক মাঝামাঝি। সেখানেও কনকোর্স হল নির্মিত হয়েছে। প্ল্যাটফর্মের কাজও শেষ পর্যায়ে। চলছে রেললাইন বসানোর কাজ। ডিওএইচএস লাগোয়া স্টেশন হচ্ছে উত্তরা দক্ষিণ। এখানে কনকোর্স ও প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি স্টেশনের ছাউনির স্টিলের কাঠামো বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, গণপরিবহনের মধ্যে মেট্রোরেল সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি চালু হবে, তত মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, তত ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল বাড়তে থাকবে। এগুলো যানজট বাড়ায়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়