ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

‘মা আর বলবে না পড়তে বসো, বলবে না ভাত খেতে এসো’

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৮, ১৪ জুলাই ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মা-বাবা দুজনই এখন আকাশের তারা হয়ে গেছেন। মা আর বলবে না পড়তে বসো, ভাত খেতে এসো। এ কথাগুলো আর কে বলবে আমাদের? আমরা মা ডাকবো কাকে? বাবা ডাকবো কাকে?

কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিল দ্বীপ সেন অর্ক। একই সঙ্গে বাবা-মা দুজনকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে দুই ভাই-বোন।

ডাক্তার দেখানোর পর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন বিশ্বজিৎ সেন বিষু। বাড়িতে মা-বাবার ফেরার অপেক্ষায় ছিল ১৬ বছর বয়সী দ্বীপ সেন অর্ক ও ১২ বছর বয়সী অমি সেন জুঁই। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ঠিকই তাদের কাছে ফেরেন বাবা-মা। তবে জীবিত নয়, নিথর হয়ে।

সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ভাইয়ারদীঘি এলাকায় বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তারা। একই দুর্ঘটনায় নিহত হন আরো চারজন। বিশ্বজিৎ সেন বিষু চন্দনাইশ উপজেলার মোহাম্মদপুর সেনবাড়ির বাসিন্দা।

মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বজিৎ সেন বিষু ও তার স্ত্রী রূপ্না সেনকে পারিবারিক শ্মশানে দাহ করে আসেন স্বজনরা। ওই সময় পুরো বাড়িজুড়ে বিরাজ করছিল সুনসান নীরবতা। আর একটু পর পর কেঁদে উঠছিল অর্ক ও জুঁই।

অর্ক একই উপজেলার কাঞ্চননগরস্থ বেগম গুল চেমন আরা একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ে। আর জুঁই পড়ে একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে।

স্বজনরা জানান, বাবা-মা বাড়ি থেকে বের হওয়ায় সময় ঘুমে ছিল অর্ক ও জুঁই। তাই বাবা-মার সঙ্গে শেষ কথাও হয়নি তাদের।

বিশ্বজিৎ সেনের ছোট ভাই জিষু সেন বলেন, চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড এলাকায় চাকরি করতেন বড় ভাই বিশ্বজিৎ সেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন তিনি। সোমবার বিকেলে বৌদিকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন পটিয়ায়। ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে দাদা-বৌদি ঘটনাস্থলেই মারা যান। 

তিনি বলেন, মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হলো অর্ক ও জুঁই। দুই সন্তানকে খুব বেশি আদর করতেন বাবা-মা। বাবা চাকরির কারণে শহরে থাকায় মায়ের সঙ্গেই বেশি সময় কাটতো তাদের। তাদের বাবা-মা আর ফিরে আসবে না।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়