ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ভারতে স্থাপত্য প্রতিযোগিতা ‘দ্য ড্রয়িং বোর্ড’ এ প্রথম রানার আপ চুয়েট

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:০৩, ২০ ডিসেম্বর ২০২০  

ছবিঃ ১. বিজয়ী তিন শিক্ষার্থী (বাম থেকে)  ফয়সাল হোসেন, সুমাইয়া সুলতানা এবং সাদমান আলী

ছবিঃ ১. বিজয়ী তিন শিক্ষার্থী (বাম থেকে) ফয়সাল হোসেন, সুমাইয়া সুলতানা এবং সাদমান আলী

ভারতে স্থাপত্য প্রতিযোগিতা ‘দ্য ড্রয়িং বোর্ড’ এ প্রথম রানার আপ হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযয়ের (চুয়েট) তিন সদস্যের একটি দল। এ দলের সদস্যরা হলেন ফয়সাল হোসেন, সুমাইয়া সুলতানা ও সাদমান আলী। সবাই স্থাপত্য বিভাগের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী। 

শুরুর গল্প:
২০১৬ সাল থেকে ভারতের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রোহান বিল্ডারস ও মাইন্ড স্পেস আর্কিটেক্ট ‘দ্য ড্রয়িং বোর্ড’ এর আয়োজন করে আসছে। দেশটির পুনে শহরে প্রতি বছর একটি করে স্থাপত্য নকশা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এবছর প্রতিযোগিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘ভারতের ক্ষণস্থায়ী নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য অস্থায়ী গৃহ নির্মাণ’। 

তাই সেপ্টেম্বরের শুরু দিকে প্রতিযোগিতার একটি অনলাইন ব্রিফ চোখে পড়ে ফয়সাল হোসেনের। তিনি সুমাইয়া সুলতানা, সাদমান আলীর সাথে আলোচনা করে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালো করোনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং চলাফেরায় স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় তারা সিদ্ধান্ত নিলেন পুরো ডিজাইনটা তারা অনলাইনে আলোচনা করে সম্পন্ন করবেন।

তারা এমন একটি আবাসের কথা চিন্তা করছিলেন, যেটি একই সাথে স্বল্প ব্যয়ী, ক্ষণস্থায়ী ও পরিবহন যোগ্য হবে। সেই লক্ষ্যে এবছরের পাঁচ নভেম্বর তারা একটি ত্রিভুজাকার গৃহের নকশা প্রতিযোগিতায় উপস্থাপন করে। এর পরের গল্পটি শুধুই সাফল্যের।  

১৯ নভেম্বর একমাত্র বাংলাদেশি দল প্রতিযোগিতার শীর্ষ সাতে স্থান করে নেয় এবং প্রতিযোগিতায়  ত্রিভুজাকার গৃহের বিস্তারিত নকশা জমা দেয়। পরবর্তীতে ২৫ তারিখ চূড়ান্ত ফলাফলে তারা ১ম রানার আপ হয়।

কি এই ত্রিভুজাকার গৃহ:

ফয়াসাল হোসেন জানান, প্রতিযোগিতায় একটি আবাসন ডিজাইনের কয়েকটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড করে দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে ছিলো ‘স্বল্প খরচে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য একটি আদর্শ গৃহ নির্মাণ’। সাধারণ একটি গৃহে অবশ্যই চারটি স্তম্ভের প্রয়োজন, কিন্তু ত্রিভুজাকার প্রত্যেকটি গৃহে একটি করা  স্তম্ভের খরচ কমে যায়। তাছাড়া এই গৃহের মূল আকর্ষণ হলো, ‘ডিস ম্যান্টল এবং রিএসেম্বল’। অর্থাৎ কোনো এক জায়গায় স্বল্প সময়ের জন্য এই ঘরটি তৈরি করে সেটি খুব সহজে গুটিয়ে পুনরায় আরেকটি জায়গায় স্থাপন করা যাবে। এতে খরচ কমে যাবে কয়েক গুন।

নকশাটির এই দুইটি বৈশিষ্ট্যই মূলত বিচারকদের মন জয় করে নিয়েছে, সেই সাথে তারাও জয় করে নিয়েছেন প্রথম রানার আপের মুকুট। কিন্তু তারা এখানেই থেমে থাকতে চান না, এমন নানাবিধ অর্জনে বাংলাদেশের নাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চান এমন মন্তব্য করে দলটির আরেক সদস্য সাদমান আলী বলেন, বিদেশের মাটিতে নিজের দেশের নাম আনতে পারাটা অনেক গর্বের বিষয়। আমাদের জন্য এটি কেবল একটি প্রতিযোগিতা ছিল না বরং স্থাপত্য সম্পর্কে সম্মানিত বিচারকদের নিকট থেকে শেখার অভিজ্ঞতা ছিল। আমাদের সবার পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে দেশের স্থাপত্য চর্চায় নিজেদেরকে নিযুক্ত করার পরিকল্পনা আছে।

তাদের এই অর্জনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চুয়েটের এই সফলতা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি আহবান জানান। একইসাথে চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার এবং স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলামও বিজয়ী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়