ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিশ্বকে যতটা বদলে দিয়েছেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২৮ অক্টোবর ২০২০  

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র তার নিজ দেশের নেতা নন। সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি তিনি। তিনি যা করেন তা বিশ্বের সবার জীবনে কিছু না কিছু প্রভাব ফেলে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও সে দিক থেকে ব্যতিক্রম নন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব যেভাবে দেখে:

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে মহান দেশ’। কিন্তু সম্প্রতি ১৩টি দেশে চালানো পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু করেননি ট্রাম্প। ইউরোপের অনেক দেশেই যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারণা আছে এমন মানুষের পরিমাণ এখন অনেক কম। গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিচে নেমে এসেছে সেটি।

যুক্তরাজ্যে ৪১ শতাংশ লোকের মনে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে ইতিবাচক ধারণা আছে। কিন্তু ফ্রান্সে মাত্র ৩১ শতাংশ মানুষের যা ২০০৩ সালের পর সর্বনিম্ন। আর জার্মানিতে এই হার মাত্র ২৬ শতাংশ।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সাড়া দিয়েছে সেটি ছিলো এই ক্ষেত্রে একটি বড় নির্ণায়ক। জুলাই ও আগস্ট মাসে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ মনে করে যে, যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবেই এই ভাইরাস মোকাবিলা করেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে উল্টো পথে ট্রাম্প:

জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ঠিক কি বিশ্বাস করেন সেটি বলা বেশ কঠিন। প্রথমে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি ‘ব্যয়বহুল ধোঁকা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এরপর আবার সেটিকে একটি ‘গুরুতর বিষয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ৬ মাস পরেই বিজ্ঞানীদের হতবাক করে ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেবেন তিনি। ওই চুক্তিতে প্রায় ২০০টি দেশ মিলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ২ ডিগ্রির নিচে রাখার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছিলো।

চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ট্রাম্প যদি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে।

প্যারিস চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, এই চুক্তির অতিরিক্ত নিয়মকানুন ও বিধিনিষেধের কারণে অনেক মার্কিন পণ্য উৎপাদকদের কারখানা বন্ধ করে দিতে হতো। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির একটি মূল বার্তায় পরিণত হয়েছে এটি। কয়লা, তেল ও গ্যাসের উৎপাদন খরচ কমাতে দূষণসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরণের নিয়মনীতি বাতিল করেছেন ট্রাম্প।

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে প্যারিস চুক্তি ত্যাগ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তার ঠিক একদিন আগেই অর্থাৎ ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন যে, এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গেলে হয়তো আরো অনেক দেশ একই কাজ করবে। যদিও তা হয়নি। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন ব্রাজিল ও সৌদি আরব যে কার্বন নির্গমন কমিয়ে দেয়ার অগ্রগতি আটকে দিয়েছে সেটি ট্রাম্পের পদক্ষেপের ফলে সহজ হয়েছে।

ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন অঙ্গীকার করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে আবার প্যারিস চুক্তিতে ফিরিয়ে আনবেন।

সীমান্ত বন্ধ:

ক্ষমতা গ্রহণের এক সপ্তাহ পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাতটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধ করে দেন। বর্তমানেও বিশ্বের ১৩টি দেশের ক্ষেত্রে কড়া ভ্রমণ বিধিনিষেধ আছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন কিন্তু বিদেশে জন্ম নিয়েছেন এমন লোকের সংখ্যা ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে তিন শতাংশ বেড়েছে। তবে এই অভিবাসীদের পরিচয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মেক্সিকোতে জন্ম নেয়া অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে। কিন্তু লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানে জন্ম এমন অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে। যেসব ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যায় এমন ভিসার নিয়মনীতি কঠোরতর করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে আছেন তাদের আত্মীয়দের ক্ষেত্রে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছিলো ‘একটি বিরাট ও সুন্দর দেয়াল’ যা তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে গড়ে তুলবেন বলে বলেছিলেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯শে অক্টোবর পর্যন্ত ৩৭১ মাইল দেয়াল নির্মিত হয়েছে সীমান্তে। আর এর প্রায় পুরোটাই হয়েছে এমন সব জায়গায় যেখানে আগে থেকেই বেড়া দেয়া ছিলো। পুরোনো বেড়া নতুন করে বানানো হয়েছে মাত্র। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য যারা বেপরোয়া তাদের দমাতে পারেনি ট্রাম্পের দেয়াল।

গত ১২ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সবচেয়ে বেশি লোক আটক হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালে ৮৫ হাজার শরণার্থী ঢুকেছিলো। তবে পরের বছর এই সংখ্যা ৫৪ হাজারে নেমে আসে। ২০২১ সালে এর সর্বোচ্চ সংখ্যা ১৫ হাজার হবে বলে ধারণা কয়ার হচ্ছে। সংখ্যাটি ১৯৮০ সালের পর সবচেয়ে কম হবে।

ফেইক নিউজ বা ভুয়া খবরের উত্থান:

২০১৭ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ট্রাম্প বলেন, আমার মতে আমি যত শব্দ ব্যবহার করেছি তার মধ্যে সবার সেরা হচ্ছে ‘ফেইক’। ফেইক নিউজ শব্দটি ট্রাম্প উদ্ভাবন করেননি তবে এটিকে জনপ্রিয় করেছেন তিনি।

এক জরিপে বলা হয়, ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে শুরু করে প্রায় দুই হাজার বার এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। গুগলে ফেইক নিউজ শব্দটি অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে সারা বিশ্ব থেকে ১১০ কোটিরও বেশি সার্চ রেজাল্ট পাওয়া যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬-২০১৭ থেকে এই আগ্রহ ক্রমাগত বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বিবেচনায় যেসব খবর ‘ভুয়া’ তার জন্য একটি পুরস্কারও ঘোষণা করার পর এ আগ্রহ শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করে।

একপর্যায়ে ট্রাম্প নিজে একমত নন এমন খবরকে আক্রমণ করার জন্য ফেইক নিউজ শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিছু সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন জনগণের শত্রু বলে চিহ্নিত করেন। থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, সৌদি আরব ও বাহরাইনের নেতারাও এই শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। অনেকে বিরোধীদল ও সাংবাদিকদের দমন-পীড়নকে বৈধতা দেয়ার জন্য ফেইক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগকে ব্যবহার করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সমাপ্তিহীন যুদ্ধ ও একটি মধ্যপ্রাচ্য চুক্তি:

মার্কিন কংগ্রেসে ২০১৯ সালে এক ভাষণে ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার করে বলেন, কোন মহান জাতি সমাপ্তিহীন যুদ্ধে জড়ায় না। তবে আসলে বাস্তবতা ঠিক এরকম নয়। সিরিয়ায় তেলকূপগুলো সুরক্ষিত রাখতে ট্রাম্প প্রায় পাঁচ শতাধিক মার্কিন সেনা সেখানে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় বিভিন্ন মাত্রায় সেনা সংখ্যা কমালেও ট্রাম্পের ক্ষমতাসীন হওয়ার দিন যেসব দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিত ছিলো সেগুলো আজও তার তেমনই রয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প সেনা ছাড়া অন্য উপায়েও প্রভাব ফেলেছেন।

২০১৮ সালে ইসরায়েলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে আনেন ট্রাম্প। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমসহ পুরো শহরটিকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবেও স্বীকৃতি দেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টদের আপত্তিকে উল্টে দেন।

গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন যখন ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তি করে তার মধ্যস্থতায় ভুমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের সূচনা’ বলে অভিহিত করেন। এটিই হয়তো ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অর্জন।

বাণিজ্য চুক্তি:

ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে যেসব চুক্তি করেননি সেগুলোকে তিনি একেবারেই অপছন্দ করেন বলেই মনে করা হয়। ক্ষমতায় এসে প্রথম দিনই তিনি পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ওবামার অনুমোদিত ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ নামে বারো জাতির একটি বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে দেন। এতে অবশ্য চীনের লাভ হয়। কারণ তারা একে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের প্রভাব কমানোর চেষ্টা হিসেবেই দেখছিলো।

উত্তর আমেরিকার ফ্রি-ট্রেড চুক্তি যা কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে করা হয়েছিলো তার আলোচনা নতুন করে করানো হয় ট্রাম্পের সময়। তিনি বলেছিলেন, এটি সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ চুক্তি। কিন্তু নতুন করে যখন এ চুক্তি করা হয় তখন দেখা যায় এর বেশিরভাগই অপরিবর্তিত রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ ছিলো যে, কিভাবে সারা বিশ্বের বাণিজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র লাভবান হতে পারে। এর ফলে চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের এক তিক্ত বাণিজ্য-যুদ্ধ শুরু হয়। দুই পক্ষই পরস্পরের পণ্যের ওপর শত শত কোটি ডলারের কর বসায়। পরে ২০১৯ সালে দেখা যায়, চীনের সঙ্গে পণ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ২০১৬ সালের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো চীনে যা রফতানি করে তার তুলনায় বেশি চীন থেকে আমদানি করে।

চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব:

ট্রাম্প নির্বাচনে জিতেছেন কিন্তু তখনও প্রেসিডেন্ট পদে বসেননি এমন এক সময় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে একটি টুইট বার্তায় পৃথিবীকে স্তম্ভিত করে দেন তিনি। যেই তাইওয়ানের সঙ্গে ১৯৭৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন ছিলো তার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। এই ফোনালাপ নিয়ে উইকিপিডিয়াতে একটি পেইজও রয়েছে।

চীন তাইওয়ানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকার করে না বরং তাদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে। এর মধ্যে দিয়েই চীনকে বিভিন্ন দিক থেকে উস্কানির সূচনা করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ভূখন্ড দাবিকে অবৈধ ঘোষণা করে। তাদের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। চীনের অ্যাপ টিকটক ও উইচ্যাট ডাউনলোড নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রে। চীনের বৃহৎ টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়েকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।

এসব কিছুর মধ্যেও হংকং নিয়ে বিতর্কিত এক নিরাপত্তা আইন জারি করেছে চীন। এছাড়া সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুরদের গণহারে কারাবন্দি করেছে। এর ফলে এই উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসেরও নিজস্ব নাম দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই ভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে অভিহিত করেন তিনি। ট্রাম্পের এসব কাজ চীনকে ব্যাপকভাবে ক্ষিপ্ত করেছে।

আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা জিতলেও যে এর পরিবর্তন হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে একজন ‘গুণ্ডা’ বলে অভিহিত করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। তার মধ্যে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন।

ইরানের সঙ্গে প্রায় যুদ্ধ:

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখতে শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। এরপর ইরানের ওপর কড়া সব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি। ফলে ইরানে ব্যাপক অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। দেশটিতে খাদ্যের দাম ৬১ শতাংশ বেড়ে যায়। এর ফলে দেশটিতে শুরু হয় গণবিক্ষোভ। ১৯৭৯ সাল থেকে চলতে থাকা ইরান-মার্কিন দ্বন্দ্ব এভাবেই আরো তীব্র হলো।

চলতি বছরে বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের সবচেয়ে শক্তিধর জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের সামরিক কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দিতেন এই নেতা। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে শতাধিক মার্কিন সেনা আহত হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছিলেন যে, দুই দেশ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধ অবশ্য হয়নি কিন্তু ইরানি বাহিনী ভুলবশত একটি ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান গুলি করে ভূপাতিত করলো। ওই ঘটনায় ১৭৬ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

সূত্র- বিবিসি

সর্বশেষ
জনপ্রিয়