ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্তের প্রতিশ্রুতি ইন্দোনেশিয়ার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫১, ৮ অক্টোবর ২০২০  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার দুটির শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে আইবিটিএ তৃতীয় পর্যায়ের চুক্তি সই হয়েছে। করোনার পর এই চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপ দেশটি।

সোমবার ক্লাউড কনফারেন্সের মাধ্যমে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও ইন্দোনেশিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কাদিন) সঙ্গে এ চুক্তি সই হয়।

ওইদিন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনার জন্য এফবিসিসিআই কাদিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘বাইল্যাটেরায়াল ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ ইন দ্য অনগোয়িং গ্লোবাল প্যানডেমিক অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক একটি ক্লাউড সম্মেলনে অংশ নেয়।

সম্মেলনে করোনা পরবর্তীতে দুই দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব) আজমল কবির, ইন্দোনেশিয়ার কাদিনের সভাপতি রোশন পার্কাসা রোস্লানি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিসেস রিনা পি সোমর্নো। 

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ওআইসি, ডি-৮, আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ), ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের চেতনায় দুই দেশের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, বাণিজ্যের উন্নয়ন ঘটাতে ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষি, বিভিন্ন পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, এনার্জি ও খনিজ খাতে বাইল্যাটেরায়াল ভ্যালু চেইন ইনিশিয়েটিভ (বিভিসিআই) নেয়া যেতে পারে। আমরা আশা করি, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পিটিএ অগ্রগতি আমাদের দ্বি-মুখী বাণিজ্য আরো জোরদার করবে।

এফবিসিসিআই এডিআর সেন্টারের বিশেষজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী প্যানেলে প্রবীণ ও ভবিষ্যৎ আইনজীবীদের একত্রিত করতে কাদিনের সমর্থনকে পুঁজি করে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বৈশ্বিক জ্ঞান অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ফলিত গবেষণা, বাণিজ্য সুবিধা, পলিসি অ্যাডভোকেসি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, ব্যবসায়ীক প্রক্রিয়া এবং স্টিম-ভিত্তিক দক্ষতাকে আরো এগিয়ে নিতে বর্তমান এফবিসিসিআই বোর্ডের ‘এফবিসিসিআই এর ভিশন ২০৪১’ চালু করা সহ অন্যান্য উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ফাহিম।

করোনা পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য ও উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরে ফাহিম আরো বলেন, আইপি সুরক্ষাসহ আরওআই প্রযুক্তির মতো অর্থনীতির রূপকারের কারণে বিনিয়োগকারীদের কাছে অন্যান্য সমমানের বাজারগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি ও জ্ঞান স্থানান্তরের মাধ্যমে ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের উৎপাদন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এগিয়ে রাখাসহ ১৬০ মিলিয়ন ডলার গ্রাহক বেস, ১.৮ বিলিয়ন সার্ক আঞ্চলিক বাজার, যা ভারত, চীন, ইইউ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে বাণিজ্য সুবিধা এবং এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট সুবিধাসহ আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগ চাহিদা পূরণের সম্ভাবনা রয়েছে এবং পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য আমি বিদ্যমান সরকারি এবং বেসরকারি খাতকে কাজে লাগাতে উভয় খাতের প্রতিনিধিদের অনুরোধ করবো।

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে ইন্দোনেশিয়ার কাদিন সভাপতি বলেন, আমরা আশাবাদী যে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (আইবিটিএ) বিষয়ক চলমান আলোচনা দ্রুতই চূড়ান্ত রূপ পাবে, যার ফলাফল হিসেবে ট্যারিফ হারে পরিবর্তন সাধনের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে। ইন্দোনেশীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের শক্তি, বিদ্যুৎ, পরিবহন, অবকাঠামো এবং পর্যটন খাতে যৌথ উদ্যোগে আগ্রহ দেখিয়েছেন, যা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হতে পারে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেও আমরা এখনো পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি, যা বর্তমানে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তিনি আরো বলেন, মহামারির কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম আইবিটিএ চুক্তির তৃতীয় পর্যায়ে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তার পরেও আমরা আশাবাদী যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমরা একটি গঠনমূলক চুক্তি প্রণয়ন করতে সক্ষম হব। যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরো এগিয়ে যাবে।

ফবিসিসিআই ক্লাউড কনফারেন্সে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বাংলাদেশে কাচামাল আমদানি, মানব সম্পদ ও দক্ষতা উন্নয়ন, অটোমোবাইল, অটোমোবাইল কম্পোনেন্ট, পাট, কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো অনুদঘাটিত সম্ভাবনাময় খাতসহ রিসোর্স শেয়ারিং ও জ্ঞানের অংশীদারিত্বের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়