ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন ইসকন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ১৮ অক্টোবর ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশ। মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন- ইসকন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস বরাবর চিঠি দিয়েছে উগ্র এই সংগঠনটি। সংগঠনটির ভারতের কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৯ দিন যাবৎ বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সীমাহীন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নোয়াখালী জেলায় যে হিন্দুরা এর প্রতিরোধ করতে গিয়েছে তাদের উপরই ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা এবং ‘৭১-এর আদলে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা দেয়া হচ্ছে। এমনকি তারা নিজ বাড়িতে বসেও পূজা-আর্চনা করতে পারছে না। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরবতা তাদের আরো ভীত করে তুলেছে।’

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ৯ দিনের যে কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা এবং ‘৭১-এর নির্যাতনের উপমা দেওয়া হয়েছে তা চরম মিথ্যা। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) কুমিল্লায় নানুয়া দীঘির পাড় মন্দিরে প্রতিমার উপর পবিত্র কোরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। সে হিসেবে ১৭ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত হয় চার দিন। কিন্তু ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘে পাঠানো চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছে নয় দিন। এখানেই তাদের বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের কথা প্রমাণ হয়।

‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য সহিংসতা’ শিরোনামে জাতিসংঘে কাছে পাঠানো সেই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) নোয়াখালীর ইসকন মন্দিরে দু’শোর অধিক সন্ত্রাসী তিন ঘন্টাব্যপী ভাংচুর চালায়। মন্দিরে আশেপাশের ১৫০টি ঘর ভাংচুর করে মালামাল লুট করা হয়েছে। এবং একটি পরিবারে সকল নারী সদস্যকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এমনকি ১০ বছরের শিশুকেও ছাড়া হয়নি।

যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। গুজবটি ছড়ানো হয় চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের ঘটনায়। আর ইসকনের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়- ধর্ষণের ঘটনাটি নোয়াখালিতে। আর এই ঘটনাকে গুজব বলে দাবি করেছেন প্রশাসন, পুলিশসহ খোদ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাই।

চিঠিতে তারা আরো উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এর জোর প্রতিবাদ না জানায় তাহলে গত ৯ দিন ধরে চলমান সহিংসতা আরো বাড়বে। এবং আরো মানুষ মারা যাবে। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার।

এই সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনায় জাতিসংঘের নিন্দা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে তাদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর আবেদনও করা হয়েছে চিঠিতে। এছাড়া আরো বলা হয়, সেখানে আমাদের একজন অনুসারীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এছাড়াও অনেকেই রয়েছেন নিখোঁজ। যার কোনো ভিত্তি নেই।

এ বিষয়ে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলছেন, বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলিমরা যুগ যুগ ধরে একসাথে বসবাস করে আসছে। কিছু ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠন এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশে আশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তবে ইসকন-এর মতো একটি সংগঠন কোনো কিছু যাচাই না করে জাতিসংঘের মতো জায়গায় মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করার বিষয়টি দুঃখজনক। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়