ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

তারেকের নেতৃত্বে আসার বিপক্ষে বিএনপির সিনিয়র নেতারা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১৯ অক্টোবর ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সরকারের অনুকম্পায় মুক্ত হবার পর এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হলেন। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো এমনটি বলছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। কিন্তু তার যে নানা রকম শারীরিক জটিলতা সেগুলো দীর্ঘস্থায়ী এবং সেগুলোর সঙ্গেই তাকে বসবাস করতে হবে বলে মনে করছেন বেগম জিয়ার চিকিৎসক প্যানেল। বর্তমানে বেগম জিয়া একজন প্রতীকী নেতা হিসেবে বিএনপিতে আছেন। আর দল পরিচালনা করছেন তার পুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতীকী নেতা হিসেবেই রাখার পক্ষেই অধিকাংশ নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া যদি কোনো কারণে নেতৃত্ব থেকে সরে যান তাহলে বিএনপি ভেঙ্গে কয়েক টুকরা হবে।

বিএনপি`র একজন নেতা বলেছেন, তারেক রহমানের মূল শক্তি হল তৃণমূল। তৃণমূলের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। কিন্তু বিএনপি’র যারা জাতীয় পর্যায়ের নেতা তাদের সঙ্গে তারেকের দূরত্ব রয়েছে এবং জাতীয় নেতৃবৃন্দ তারেককে নেতৃত্বে দেখার ক্ষেত্রে আপত্তি প্রকাশ করে থাকেন। তারেক বিএনপির আনুষ্ঠানিক নেতৃত্বে আসুক এমনটি যারা চান না তাদের মধ্যে রয়েছেন,

১. ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন: ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ছিল তার ঘনিষ্ঠতা। খালেদা জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত। তারেক জিয়া কর্তৃক বিএনপির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের আগে পর্যন্ত ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ছিলেন অন্যতম নীতিনির্ধারক। কিন্তু এখন তিনি অনেকটাই কোণঠাসা অবস্থায় আছেন শুধুমাত্র তারেকের জন্য। কিন্তু দলের ভেতরে তার প্রভাব রয়েছে এবং সকলের কাছেই তিনি একজন শ্রদ্ধেয় নেতা। তিনি তারেক জিয়ার আনুষ্ঠানিক নেতৃত্বে প্রধান বাধা বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

২. মির্জা আব্বাস: মির্জা আব্বাস বিএনপির আরেকজন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তার সঙ্গেও তারেক জিয়ার সাম্প্রতিক দ্বৈরথের খবর পাওয়া যায়। বিশেষ করে ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে তিনি যে প্রকাশ্য মন্তব্য করেছিলেন এজন্য তাকে শোকজ করা হয়েছিল। এই শোকজের তিনি জবাব দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপি নেতাদের চাপে তারেক জিয়াকে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি। তবে এই ঘটনা দুজনের সম্পর্ককে তলানীতে নিয়ে গেছে। যারা তারেক জিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান না তাদের মধ্যে অন্যতম মির্জা আব্বাস।

৩. মেজর হাফিজ উদ্দিন: মেজর হাফিজ উদ্দিন বিএনপির প্রভাবশালী একজন নেতা। বিশেষ করে দলের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। তিনি সরাসরিভাবে তারেকবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রায়ই তারেক জিয়ার কারণে বিএনপি যে আজকের এই হাল হয়েছে সেটি মনে করেন এবং এই নিয়ে কথা বলতেও তিনি রাখঢাক করেন না। অনেকেই মনে করেন যে, তারেক জিয়ার সাথে বিরোধের কারণেই তিনি হয়তো দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব পাননি। কিন্তু নেতৃত্ব পান না পান দলে তার প্রভাব সর্বজনবিদিত।

৪. আব্দুল্লাহ আল নোমান: বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আব্দুল্লাহ আল নোমান। তারেক জিয়ার কারণেই আব্দুল্লাহ আল নোমান রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়েছেন এবং চট্টগ্রামে তিনি অবিসংবাদিত নেতা হওয়ার সত্বেও তার বদলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এটি নিয়ে আব্দুল্লাহ আল নোমান অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। এখন তিনি নানা রকম শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে থাকলেও বিএনপি`র জন্য তিনি একজন মূল্যবান সম্পদ বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তিনিও খালেদা জিয়ার পরিবর্তে তারেক জিয়ার চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলবেন বলে মনে করেন বিএনপির অনেক নেতাই।

এছাড়াও বিএনপিতে অনেকে আছেন যারা তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আসার বিপক্ষে। তারা মনে করেন যে, তারেক জিয়া বিএনপি`র প্রধান হওয়ার জন্য এখনও উপযুক্ত নন।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়