ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

জেনে নিন, শাহরুখের বাড়ির আসল মালিক কে?

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২ নভেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ব্যান্ডস্ট্যান্ডের প্রায় শেষ প্রান্তে বলিউডের কিং খানের ঠিকানা মান্নাত। মুম্বাই এসেছে অথচ মান্নাত দর্শন করেননি, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।

একদিকে আরব সাগরের নিঃসঙ্গতা, অন্যদিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা বিলাসবহুল মান্নাত। দেখে মনে হয় যেন আরব সাগরের বুকে আছড়ে পড়া ঢেউগুলো এক ঝলক চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে হিন্দি চলচ্চিত্রের এ বাদশাকে।

শাহরুখপুত্র আরিয়ান খান মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর এবং আরিয়ানে জামিন পাওয়ার ঘটনা ঘিরে মান্নাত এখন অতি পরিচিত নাম। বেশকয়েকবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে সম্প্রতি। বলিউড বাদশা শাহরুখের অনুরাগীদের কাছে মুম্বাইয়ের অন্যতম দর্শনীয় স্থান মান্নাত। মুম্বাইয়ের ব্যক্তিগত সবচেয়ে দামি বাড়ির মধ্যে অন্যতম হলো শাহরুখের 'মান্নাত’। প্রিয় নায়কের বাড়ি মান্নাতকে ঘিরে সব সময় ভিড় করে থাকেন শাহরুখ ভক্তরা। বিশেষ করে ‘মান্নাতের' অন্দরমহল দেখার কৌতূহল দমিয়ে রাখতে পারেন না অনেকেই।

তবে অনেকেই জানেন না এ মান্নাতের তৈরি হওয়ার কাহিনি। আসল মালিক কে ছিলেন?

শুরুতে মান্নাতের মালিকানা ছিল অন্য ব্যক্তির হাতে। বাড়ির নাম ছিল  ‘ভিলা ভিয়েনা’। অনেক দাম কষাকষির পর ওই বাড়িটি বিক্রি করতে বাড়ির মালিককে রাজি করন শাহরুখ এবং পরে তার থেকেই বাড়িটি কিনে নেন তিনি।

ভারতের গুজরাতের ব্যবসায়ী নরিম্যান দুবাসের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল এ  ভিলা। এ ভিলাতেই বংশ পরম্পরায় থাকতেন ওই ব্যবসায়ী। পরে তিনি অন্য একটি বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। তারপরই বাড়িটি কেনার চেষ্টা শুরু করেছিলেন শাহরুখ।

শাহরুখ ১৯৯৭ তার ইয়েস বস সিনেমার শুটিং করেছিলেন বর্তমান মান্নাতের সামনে। তখন বাড়িটির নাম ছিল ‘ভিলা ভিয়েনা’। তখন থেকেই বাড়িটিতে মন ধরে গিয়েছিল শাহরুখের।

পরবর্তীতে ২০০১ সালে ব্যবসায়ী নরিম্যানের সঙ্গে দেখা করেন শাহরুখ। বাড়িটি বিক্রি করার জন্য নরিম্যানকে রাজি করিয়েছিলেন তিনিই। অনেক দর কষাকষির পর ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকায় সেই ভিলা কেনেন তিনি।

বর্তমানে বাড়িটির মূল্য অন্তত ২০০ কোটি টাকা। ‘ভিলা ভিয়েনা’ নামই ছিল বাড়িটির ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল এ চার বছর। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে নাম বদলে ফেলেন শাহরুখ।

বলিউড বাদশা শাহরুখের কেনা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি জিনিস হলো 'মান্নাত'। প্রাসাদসম বাড়িটি কেনার আরও একটি কারণ রয়েছে। শাহরুখ ছিলেন দিল্লির বাসিন্দা। দিল্লির মানুষদের ‘কোঠি’ অর্থাৎ বাংলোতে বসবাস করার অভ্যাস। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ মুম্বাইতে ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন। মুম্বাই আসার পর স্ত্রী গৌরীর সঙ্গে সে রকমই একটি ছোট ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি।

২০১৯ সালে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেন, আমি যখন প্রথম মুম্বাইতে এলাম, তখন বিবাহিত। গৌরীর সঙ্গে ছোট্ট একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম। আমার শাশুড়ি আমাকে দেখলেই বলতেন, এত ছোট একটা বাড়িতে থাকো কী করে? আর মান্নাত দেখামাত্রই মনে হয়েছিল, এটা এক্কেবারে দিল্লির বাংলোর মতো। তখনই কিনে ফেলি। আর এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে দামি জিনিস।

বাড়ির প্রতিটি জায়গা গৌরী তার মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজিয়েছেন। রয়েছে তার প্রিয় কিছু জিনিসপত্র। যেমন জেড পাথরের গণপতি, প্যারিস থেকে আনানো চার ফুট লম্বা এক জোড়া কালো ফুলদানি, রাধাকৃষ্ণের বিশাল ভাস্কর্যসহ আরও কিছু ঘর সাজানোর জিনিস।

এগুলো সবই রয়েছে শাহরুখ পত্নীর পছন্দের প্রথম সারিতে। শাহরুখের ইচ্ছাতে পরবর্তীকালে গৌরী মান্নাতের ভিতরেই তৈরি করিয়েছিলেন একটি সিনেমা হল। সেই সিনেমাহলে একসঙ্গে ৪২ জন দর্শক বসে ছবি দেখতে পারবেন। তার প্রবেশদ্বার সাজানো রয়েছে তিনটি হিন্দি ছবির বিশাল পোস্টারে। ছবিগুলি হল ‘শোলে’, ‘রাম অউর শ্যাম’ এবং ‘মুঘলে আজম’।

ছয় তলা বাংলো মান্নাতে একাধিক শয়নকক্ষ ছাড়াও রয়েছে টেরেস, বাগান এবং ব্যক্তিগত কোয়ার্টার। সব কিছু সাজানো ইতালিয়ান স্থাপত্য ও নব্য ধ্রুপদী উপাদানে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়