ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩০

কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ আসে যেভাবে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১ মার্চ ২০২৩  

কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ আসে যেভাবে

কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ আসে যেভাবে

ইসলাম ধর্মের অনুসারী পবিত্র কাবার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করে। ইসলামের সূচনাকালেও মুসলিমরা কাবার দিকে ফিরেই নামাজ আদায় করতেন। তবে মধ্যবর্তী কয়েক মাস (১৬-১৭ মাস) আল্লাহ তাআলা মসজিদুল আকসার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করার নির্দেশ দেন। 

মদিনায় হিজরতের পর নবীজি বাইতুল মাকদিসের দিকে মুখ করেই নামাজ আদায় করতেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীল (আঃ)-কে বলেছিলেন- আমার আশা, আল্লাহ তায়ালা যেন আমার চেহারা ইহুদীদের কিবলা হতে ফিরিয়ে দেন। জিবরীল বললেন- আমি তো আল্লাহর একজন বান্দা মাত্র। আপনি আপনার রবের কাছে প্রার্থনা করুন এবং তাঁর কাছেই বিষয়টি বলুন। তিনি কিবলা পরিবর্তনের আশায় আকাশের দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা এই আয়াত নাযিল করলেন-

‘নিশ্চয়ই আমি তোমাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি তোমাকে সেই কিবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব, যাকে তুমি পছন্দ কর। এখন তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ কর এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকেই মুখ কর’’। (সূরা বাকারা-২:১৪৪) এটি ছিল হিজরতের ১৬ মাস পরের এবং বদরের যুদ্ধের মাত্র দুই মাস পূর্বের ঘটনা।

এরপর কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ যখন আসে, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে বনু সালামায় জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন। দুই রাকাত আদায় করার পর কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ আসে। নামাজের ভেতরই রাসুল (সা.) বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে যান। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ সেদিকে ফিরেই আদায় করেন।

কেবলা পরিবর্তনের এই জায়গাকে ঘিরে একটি মসজিদ গড়ে উঠে। একে মসজিদে কিবলাতাইন বলা হয়। যা মদিনা নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিম উপকণ্ঠে অবস্থিত। এটি মসজিদে নববী থেকে এর দূরত্ব চার কিলোমিটার। দ্বিতীয় হিজরিতে সাওয়াদ বিন গানাম গোত্রের লোকেরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজে তারা কাঁচা ইট, পাথর, খেজুরগাছের পাতা ও ডাল ব্যবহার করেছিল। 

পরবর্তী সময়ে খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.), শাহিন সুজা জামালি, উসমানীয় সুলতান সোলায়মান, বাদশাহ আবদুল আজিজ ও ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ মসজিদে কিবলাতাইনের সংস্কার করেন। বাদশাহ আবদুল আজিজ মসজিদের পুরনো অবকাঠামো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করেন। ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ তার আধুনিকায়ন করেন।

বর্তমানে মসজিদে কিবলাতাইনের আয়তন তিন হাজার ৯২০ স্কয়ার মিটার। মসজিদে রয়েছে দুটি গম্বুজ। যার একটির আয়তন আট মিটার এবং অন্যটির আয়তন সাত মিটার। উভয় গম্বুজের উচ্চতা প্রায় ১৭ মিটার। কিবলা পরিবর্তনের ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে এখনো মসজিদের দুটি মেহরাব ও আজানের স্থান (মিনার) রাখা হয়েছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়