ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জের বীরদামপাড়ায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৪ নভেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

শৈশবে ‘গোলাপ’ নামে পরিচিত সৈয়দ নজরুল ইসলামের রাজনীতির হাতেখড়ি ছাত্র জীবনে। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির গুরুদায়িত্ব পড়ে সৈয়দ নজরুল ইসলামের কাঁধে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও এলাকার মাটি আর মানুষকে ভুলে যাননি তিনি। সুযোগ পেলেই ছুটে যেতেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের বীরদামপাড়ার বাড়িতে। এখনও গ্রামবাসীর হৃদয়ের মণিকোঠায় রয়েছেন আজীবন সংগ্রামী এ নেতা। তবে স্বাধীন দেশে নিরাপদ কারাগারেই জীবন দিতে হয় তাকে। ইতিহাসের নির্মম এ হত্যার পূর্নাঙ্গ বিচার দেখতে চান স্বজন ও এলাকাবাসী।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের নিভৃত গ্রাম বীরদামপাড়া। এ গ্রামেই জন্মেছিলেন দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম। গ্রামের জল-কাদা গায়ে মেখে শৈশব কাটে তার। বীরদামপাড়া গ্রামে জরাজীর্ণ টিনের তৈরি ছোট্ট বসত ঘরটি এখনও যেন তার স্মৃতি বহন করে চলছে।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সৈয়দ নজরুল ইসলামকে। আজীবন ত্যাগী এ নেতার জন্য এখনও নীরবে চোখের জল ফেলেন এলাকাবাসী। সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতা হত্যার পূর্ণাঙ্গ বিচার দেখে যেতে চান তারা।

ওই গ্রামের বয়স্করা জানান, জাতীয় নেতা হলেও এলাকার প্রতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছিল গভীর মমতা। সুযোগ পেলেই ছুটে আসতেন গ্রামের বাড়িতে। স্বাধীনতার পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর যশোদলে গড়ে তুলেন সুগার মিল, টেক্সটাইল মিলসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা। কিন্তু তার মৃত্যুর পর নিভে যায় সকল সম্ভাবনার আলো।

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ এ আফজল বলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন এ দেশের অন্যতম স্থপতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তার দৃঢ় নেতৃত্বে মাত্র ৯ মাসে আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাই। সৈয়দ নজরুল ইসলামের সংগ্রামী জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ গড়তে নতুন প্রজেন্মের প্রতি আহ্বান জানান বর্ষীয়ান এ নেতা।

কিশোরগঞ্জবাসীর দাবি, অবিলম্বে সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার অস্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক। সেইসঙ্গে সৈয়দ নজরুল ইসলামের গ্রামের বাড়িটি সংরক্ষণ করে এখানে একটি পাঠাগার, যাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হোক।

তবে আশার কথা জাতীয় চার নেতার নামে চার জেলায় স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, বীরদামপাড়া গ্রামে সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে একটি স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. জাকিয়া নূর লিপির পরামর্শে বীরদামপাড়া গ্রামে এক একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলে কিছুদিনের মধ্যেই প্রকল্পটি পাশ হবে বলে আশা করেন তিনি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়