ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে কেন সুর পাল্টাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র?

স্বাস্থ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৩১ অক্টোবর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের দ্বিধা-বিভক্তি দূর না হলেও সুর পাল্টাল যুক্তরাষ্ট্র।

চীনের গবেষণাগারে জৈব অস্ত্র হিসেবে এটি তৈরি করা হয়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। তারা বলছে, করোনার উৎস হয়তো কখনোই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না। কেননা এ সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি। এদিকে ভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করার পদক্ষেপটিকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রহসন বলে অভিযোগ করেছে চীন।

জীবজন্তু থেকে মানুষের মধ্যে করোনা ছড়িয়েছে নাকি চীনের গবেষণাগারে তৈরির পর এটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য মানুষের শরীরে করোনা ছড়ানো হয়েছে, এমন ধারণার কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।

প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার উৎস হয়তো কখনোই জানা যাবে না। তবে এটা যে জৈব অস্ত্র হিসেবে তৈরি করা হয়নি এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। খবর বিবিসি, রয়টার্স।

প্রতিবেদনে সেখানে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য উৎস নিয়ে এখনও গোয়েন্দা সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে চীন।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউএক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের উৎস খোঁজার জন্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের ওপর নির্ভর না করে যুক্তরাষ্ট্র বরং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ওপর আস্থা রাখছে। ওয়াশিংটনের এই কর্মকাণ্ড পুরোপুরি রাজনৈতিক প্রহসন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মকাণ্ড ভাইরাসের উৎস নির্ধারণে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাকে ছোট করবে এবং একই লক্ষ্যে পরিচালিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকেও বাধাগ্রস্ত করবে।

শুরু থেকেই করোনা ছড়ানোর জন্য চীনকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তাদের অভিযোগ, উহানের গবেষণাগার থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভাইরাসটিকে ছড়ানো হয়েছে। আর চীন এ তথ্য বিশ্ববাসীর কাছে গোপন করেছে। আর এখন ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে চীন পর্যাপ্ত সহযোগিতা না করায় এর উৎস হয়তো কখনোই জানা যাবে না বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। যদিও এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে বেইজিং।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীনা কর্মকর্তারা ২০১৯ সালের শেষের দিকে উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে ভাইরাসটির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতেন না। তবে ওই রিপোর্টে চীন যে বিশ্বব্যাপী তদন্তে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং তথ্য শেয়ার করা বাধাগ্রস্ত করেছে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে চীনের উহান থেকে এ করোনাভাইরাস ছড়ায়। প্রাকৃতিকভাবে কাঁচাবাজার থেকে মানুষের শরীরে এটি ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন চীনের গবেষকরা।

এদিকে, করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তে চীনকে আরও সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য নতুন একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচও বলছে, কীভাবে করোনার সূত্রপাত হলো তা খুঁজে বের করতেই এই টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে। এই টাস্কফোর্সই শেষ সুযোগ করোনার উৎস সন্ধানের জন্য।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেট থেকেই প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।

কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে, যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে উহানের ল্যাব থেকে দুর্ঘটনাবশত এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। মে মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ল্যাব লিক তত্ত্বসহ ভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। কিন্তু চীন তা প্রত্যাখ্যান করে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়