ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘আমরাও চাই উপযুক্ত বিচার হোক’: সৈয়দ মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫১, ৮ অক্টোবর ২০২০  

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

খালাস দেয়া রায়ের বিষয়ে যে রকম সংবাদ প্রকাশিত হয়, একইভাবে যেসব মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে সে সব মামলার সংবাদও প্রকাশ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। 

বুধবার প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে ল’রিপোর্টার্স ফোরাম। 

প্রধান বিচারপতি বলেন, কিছুদিন আপিল বিভাগে জেল আপিলের রায় হয়েছে। জেল আপিল করতে গিয়ে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামিকে আমরা ছেড়েছি। কারণ আমরা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছি যে আমরা ন্যায়বিচার করবো। সততার সঙ্গে ন্যায়বিচার করবো। সেটা শপথের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিচার করেছি, ছেড়েছি। আপনারাও (সাংবাদিকরা) এটি নিয়ে বড় বড় প্রতিবেদন করেছেন। বিশাল বিশাল প্রতিবেদন করেছেন। আমিও টিভিতে দেখেছি যে, এত বছর কেন (আসামি) কনডেম সেলে ছিল, আপিল বিভাগ কেন আগে করেনি। ‘হ্যাঁ, আপিল বিভাগ কিন্তু বসে থাকেনি। বার থেকে বলে যে, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা এটা এখন করতে হবে। আমরা এটাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছি। আমরা অনেক জেল আপিল করতে পারিনি। আমি এখন বলেছি সিরিয়াল ছাড়া কোনো মামলা হবে না। কিন্তু আপনারা যে রকম প্রতিবেদন করেছেন এতদিন ডেথ সেলে থাকার পর আমরা ছেড়েছি কেন। কিন্তু আমরা গত কয়েকদিনে একটাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছি। এটার উপর সংবাদ করেননি।’

তিনি বলেন, আজ এক মামলায় তিনজনের ডেথ নিশ্চিত (মৃত্যুদণ্ড বহাল) করেছি। এটা নিয়ে কোনো সংবাদপত্রে কোনো নিউজ নেই। কারণ এখন সারাদেশে নারীদের উপর এত নির্যাতন যে সরকার পর্যন্ত ব্রিবত। সরকারের মন্ত্রী পর্যন্ত বলেছে আমরা মতায়, আমরা এটার দায় এড়াতে পারি না। আমরাও চাই উপযুযক্ত বিচার হোক। কিন্তু উপযুক্ত যেখানে বিচার হচ্ছে, যেখানে ছাড়া (খালাস কিংবা দণ্ড কমানো) মৃত্যুদণ্ড যেখানে বহাল রাখা হচ্ছে সেটাও যদি জনগণের সামনে আসে, তখন জনগণের স্বস্তি হবে। শুধু ছাড়ছে না তার সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড হচ্ছে, ফাঁসিও হচ্ছে। সেটাও মানুষের জানার অধিকার আছে।

মাহবুবে আলমের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, তার একটা সবচেয়ে বড় কথা ছিল বিচার অঙ্গনে যত অনিয়ম আছে এগুলো দূর করতে হবে। তিনি আমাকে বলেছেন সেন্ট্রাল ফাইলিং করেন। এটা যদি করেন তাহলে কোর্টের ৫০ শতাংশ অনিয়ম দূর হয়ে যাবে। আমি বারের (সুপ্রিম কোর্ট বার) নেতাদের বলেছি আপনারা যদি সেন্ট্রাল ফাইলিংয়ে আসেন তাহলে বারের যে অনিয়ম আছে তার ৫০ শতাংশ চলে যাবে। কিন্তু বার থেকে বললো সেন্ট্রাল ফাইলিং হবে না। আমরা (বার) আমাদের চয়েস অনুযায়ী কোর্ট নির্বাচন করবো। আমি আশা করবো বার (সুপ্রিম কোর্ট বার) মাহবুবে আলমের ইচ্ছাটা অচিরেই বাস্তবায়ন করবেন। আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই, সেন্ট্রাল ফাইলিং যদি হয় তাহলে সুপ্রিম কোর্টের অনিয়ম ৫০ শতাংশ থাকবে।

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, আমরা সমস্যার মূলে যদি হাত না দেই যত অনিয়মের কথা বলি কোনো অনিয়ম কোর্ট থেকে দূর হবে না। আগে মূলে আঘাত করতে হবে। মূলে আঘাত করলে অনিয়ম দূর হবে। তার আগে অনিয়ম দূর হবে না।

ফোরামের সভাপতি মাশহুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনায় স্মৃতিচারণ করেন, বিশেষ অতিথি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক  ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, আইনজীবী কেএম সাইফুদ্দিন, অ্যাটর্নি জেনারেলের ছেলে সুমন মাহবুব।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়