ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আওয়ার শেরপুরের আয়োজনে ‘কাস্টমার মিটআপ’

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ২৫ নভেম্বর ২০২০  

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আওয়ার শেরপুর ডটকম আয়োজন করেছিল ‘কাস্টমার মিট অ্যান্ড গ্রিট ইন মিরপুর’। মঙ্গলবার দিনব্যাপী রাজধানীর মিরপুরস্থ কাজী পাড়ার হেবাং রেস্তোরায় অনুষ্ঠানটি হয়।

প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ই-কমার্স ব্যবসা। আগে ই-কমার্স ব্যবসার পরিচিতি তুলনামূলক কম থাকলেও বর্তমানে এর বিস্তৃতি ঘটেছে ব্যাপক। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ই-কমার্সের বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ, যা আমাদের দেশের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। গতানুগতিক পদ্ধতিতে একজন ক্রেতা দোকানে গিয়ে পণ্য ক্রয় করেন। অনলাইনে পণ্য ক্রয়ের একমাত্র মাধ্যম ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজ। নিজের পণ্য ‘তুলশীমালা’ চালের গুণাগুণ ও পণ্য সেবার মান নিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে জানতে মিটআপের আয়োজন করেন উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন।

মিটআপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) ই-ক্যাবের যুগ্ম-সম্পাদক ও (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স) উইর প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা, ফারাহ’স ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারি ও উইর ওয়ার্কিং কমিটির ডিরেক্টর সামিয়া ফারাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাইজিংবিডি ডটকমের ক্যাম্পাস ও উদ্যোক্তা পাতার সম্পাদক হাকিম মাহিসহ শতাধিক উদ্যোক্তা ও ক্রেতা। 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, ‘এমন কাস্টমার মিটআপ আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজন। এখানে আসতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। এমন উদ্যোগে কাস্টমারের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পর্ক খুব ভালো হবে বলে আমি মনে করি।’

হাকিম মাহি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের সফলতা ও তাদের কাজ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা সবসময় কাজ করবো। একদম নিজ উদ্যোগে উদ্যোক্তাদের প্রমোট করব। মিটআপে এসে উদ্যোক্তাদের মাঝে কথা বলতে পেরে আমি আনন্দিত। এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উই ও দেলোয়ার ভাইকে সাধুবাদ জানাই।’

মিটআপের আয়োজক ও উদ্যোক্তা দেলোয়ার বলেন, ‘কাস্টমার আমাদের চালিকা শক্তি। এক ছাদের নিচে তাদের কথাগুলো শুনতে ও তাদের সম্মান জানাতে ‘কাস্টমার মিট অ্যান্ড গ্রিট’ এর আয়োজন। মূলত কাস্টমারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি, আমাদের সঙ্গে কেনাকাটার অভিজ্ঞতা ও তাদের পরামর্শগুলো জানার জন্য আয়োজন করেছি মিট অ্যান্ড গ্রিট। এটি আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা। ৩টি প্রোডাক্ট প্যাকেজ ঘোষণা করায় ১৯০০০ টাকার বেশি অর্ডার পেয়েছি।’

ঢাকার বাসাবো থেকে মিটআপে উপস্থিত কাস্টমার সুলতানা দিপু বলেন, ‘তুলশীমালা চালের নামটা প্রথমে যখন শুনেছিলাম, তখন এক প্রকার অবাক হয়েছিলাম। এ কেমন চাল! আওয়ার শেরপুর ডটকম পেজের সবার রিভিউ থেকে জানলাম এটা এক প্রকার সুগন্ধি চাল। ভাবলাম আমিও নেবো। কিন্তু দেশে চলমান লকডাউন থাকায় নিতে পারিনি। কুরিয়ার কোম্পানিগুলো স্বাভাবিক হলে আমিও অনলাইনে তুলশীমালা চাল অর্ডার করলাম। যেদিন হাতে পেলাম সঙ্গে সঙ্গে পায়েস রান্না করেছিলাম। পায়েস রান্না করে আমি একটা কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমার বাসার সবাই পায়েস খেয়ে শেষ। আমার জন্য একটুখানি রেখেছিল। তাহলে বুঝতেই পারছেন চালটা আসলে কেমন? তুলশীমালা চাল দেশের আনাচে-কানাচে ও বড় বড় রেস্টুরেন্টে ছড়িয়ে যাক এই দোয়া রইলো।’

ক্রেতা জান্নাতুল ফেরদৌস নিপা বলেন, ‘তুলশীমালা চাল আমার কাছে একদমই নতুন একটা নাম ছিল। উই গ্রুপে দেলোয়ার ভাই দিনের পর দিন তার লেখার মাধ্যমে পরিচয়হীন চালকে আমাদের কাছে পরিচিত করে তুলেছেন। আমি এই চালের উপকারিতাগুলো জানতে পেরে খুব আগ্রহী হয়ে হয়েছিলাম। কারণ, প্রথম যখন ৪ জানুয়ারি ২০২০ আমি তুলশীমালা চাল কেনার চিন্তা করি, তখন আমার জমজ মেয়ের বয়স ছিল ২ বছর। পোলাও চাল দিয়ে তৈরি করা খিচুড়ি আর পায়েস তাদের হজমে কিছুটা সমস্যা করতো। একারণে গ্যাসের সমস্যা ও বমি হতো। ওই সময়ে তুলশীমালা চালের গুণাগুণ দেখে আমি এই চাল দিয়ে মেয়েদের জন্য খিচুড়ি ও পায়েস রান্না করে খাওয়াই। এ চালের এত সুন্দর ঘ্রাণে আমার মেয়েরা খুব পছন্দ করে খায়।’ 

ক্রেতা ইফ্ফাত শারমিন ও সাজিয়া আফরিন বলেন, তুলশীমালা চাল! দেলোয়ার ভাইয়ের স্টার্টআপ উদ্যোগ আওয়ার শেরপুর থেকেই প্রথম জানতে পারি তুলশী মালা সম্পর্কে। প্রথম রান্নায় মনে হয়েছিল চালটা সম্পূর্ণ ক্যামিকেল মুক্ত। বর্তমানে তুলশী মালা চাল আমাদের নিত্য দিনের সাথী। আমাদের দেশে এত ভালো একটা চাল আছে তা জানানো ও আমাদের দোরগোড়ায় তুলশী মালা পৌঁছে দেওয়ার জন্যে ‘আওয়ার শেরপুর ডটকম’ ও দেলোয়ার ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এ ছাড়াও উইর ওয়ার্কিং কমিটির ডিরেক্টর ও মিট আপের অরগানাইজার ইমরান হোসেন বলেন, ‘এমন মিটআপ থেকে সবচেয়ে কার্যকরী যেটা হয়, তা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যে আস্থার ভিত অনেক মজবুত হয়। ক্রেতা নিয়মিত কেনাকাটায় আরও আগ্রহী হবে ও বিক্রেতা হবে দায়িত্বে আরও যত্নশীল। যেহেতু আমাদের দেশে এখনো ই-কমার্স সেক্টরে কেনাকাটায় অনেকেই ভরসা করতে পারেন না, তাই এই মিটআপগুলো সেটা অর্জনে অনেক মূখ্য ভুমিকা পালন করতে পারে।’

কাস্টমার মিটআপের উপকারিতার কথা বলতে গিয়ে ই-ক্যাবের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা ও উইর উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ বলেছেন, ‘কাস্টমার মিটআপের চিন্তা করেছি কারণ, ক্রেতারা যারা উইতে পুরনো, তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করছেন। উই এখন ১০ লাখ সদস্যের গ্রুপ। আগের মতো ছোট জায়গা নয়। কাস্টমার মিটআপে এভাবে পুরনোরা নিয়মিত একে-অন্যের সাঙ্গে দেখা করছেন আবার সেই সঙ্গে একে-অন্যের কাস্টমার হচ্ছেন। এর সুফল অনেক।’

সর্বশেষ
জনপ্রিয়