এখন থেকে শীতকালে হবে ডিসি সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০১:২৩ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার

এখন থেকে শীতকালে হবে ডিসি সম্মেলন

এখন থেকে শীতকালে হবে ডিসি সম্মেলন

জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কাজ শুরু করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী বছর থেকে এ সম্মেলন হবে বছরের শুরুতেই, অর্থাৎ শীতকালে। ফলে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের একটি পরিকল্পনা থাকলেও সেটি আর হচ্ছে না।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পরবর্তী ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আটটি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও ৬৪ জেলা প্রশাসককে গত আগস্টের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পাঠাতে চিঠি দিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মাঠ থেকে আসা পাঁচ শ'র বেশি প্রস্তাব যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।

করোনার আগে সাধারণত প্রতিবছর জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলন হতো। করোনার দুই বছর স্থগিত থাকার পর গত সম্মেলনটি হয় জানুয়ারি মাসে। এখন বছরের শুরুতেই, অর্থাৎ শীতকালেই ডিসি সম্মেলন হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র  বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে আগামী জানুয়ারির কোন তারিখে সম্মেলন শুরু হবে, তা প্রধানমন্ত্রীর সময় দেওয়ার পর ঘোষণা করা হবে।

সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে। তাঁর বিদায়ের আগে আরেকটি ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।

কিন্তু বর্তমান পরিবেশ-পরিস্থিতিতে একই বছরে দুটি সম্মেলন আয়োজনের চিন্তা থেকে সরে এসেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসন থেকে আসা প্রস্তাবগুলো নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে চার দফা সমন্বয় সভা শেষ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এর মাধ্যমে বছরের মধ্যবর্তী সময়ে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের রেওয়াজ থেকে বের হয়ে আসছে সরকার। এখন থেকে জানুয়ারি মাসে এ সম্মেলন হবে। সংশ্নিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, করোনার কারণে পরপর দুই বছর ২০২০ ও ২০২১ সালে ডিসি সম্মেলন হয়নি। আগামী জানুয়ারিতে ডিসি সম্মেলনের নতুন সময় রীতি তৈরি হবে। এ বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন সংশ্নিষ্টরা।

মাঠ প্রশাসনে থাকা সাবেক একজন অতিরিক্ত সচিব নিজের অভিজ্ঞতা থেকে  বলেন, করোনার আগের রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলন হতো। জুলাই মাসে, অর্থাৎ বর্ষাকালে দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। তখন সংশ্নিষ্ট জেলায় ডিসিরা না থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হয়। তা ছাড়া বর্ষাকালে সারাদেশ থেকে ডিসিদের ঢাকায় আসা-যাওয়ার ভ্রমণেও সমস্যা হয়। সব মিলিয়ে শীতকালে নিয়মিত ডিসি সম্মেলন হওয়াটা
ভালো সিদ্ধান্ত।

এবারের সম্মেলন উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মাঠ প্রশাসনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসক সম্মেলন সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন। জেলা প্রশাসক হিসেবে মাঠ পর্যায়ে সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের একটি অনন্য সুযোগ। এ জন্য বিদ্যমান আইন, নীতি, বিধিমালা ও সরকারের নির্দেশনাবলি অনুসরণে কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করাসহ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮, প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ, সংশ্নিষ্ট এলাকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সরকারের অন্যান্য উন্নয়ন লক্ষ্য বিবেচনাপূর্বক জেলা প্রশাসক সম্মেলনে নীতিনির্ধারকদের কাছে সুপারিশ/প্রস্তাব উপস্থাপন এবং নির্দেশনা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে তিনটি জেলার ডিসির সঙ্গে কথা বলেছে । উত্তরাঞ্চলের একটি জেলার ডিসি বলেন, একই বছরে দুটি সম্মেলন অনুষ্ঠান তাড়াহুড়া হয়ে যায়। তাই জানুয়ারিতে সম্মেলন অনুষ্ঠানই যুক্তিযুক্ত। অন্যদিকে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ডিসি সম্মেলনের দায়িত্ব পালন করেছেন এমন অভিজ্ঞতা থাকা একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তাঁরাও জানুয়ারি মাসে ডিসি সম্মেলনের জন্য সঠিক সময় বলে মনে করেন।