কিশোরগঞ্জে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালিত

ডেস্ক রিপোর্ট

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০১:৪১ পিএম, ২ মার্চ ২০২২ বুধবার

সংগ্রহীত

সংগ্রহীত

কলা ঝিনাইদলের ব্র্যান্ড পণ্য। এ জেলায় প্রচুর পরিমাণে কলা চাষ হয়। কলার পাশাপাশি কলাগাছও আয়ের উৎস বানিয়েছেন ঝিনাইদহের দুজন উদ্যোক্তা। কলাগাছের আঁশ থেকে সুতা তৈরি করছেন তারা। যা এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

দুই উদ্যোক্তা হলেন- ঝিনাইদহ সদরের কালীচরণপুর ইউনিয়নের মান্দারবাড়িয়া গ্রামের পোশাক ব্যবসায়ী একেএম শাহেদুল হক ও দুবাই প্রবাসী ওসমান বিশ্বাস। কলা চাষিদের কাছ থেকে কলাগাছ সংগ্রহ করে বাড়িতেই সুতা তৈরির কাজ করছেন তারা। এতে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা।

কলা উৎপাদনের পর কলাগাছের কিছু অংশ পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাকি সব ফেলে দিতে হয়। সেই ফেলে দেওয়া গাছের আঁশ থেকে সুতা উৎপাদন করছেন শাহেদ ও ওসমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহেদ ও ওসমান ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থানীয় ওয়ার্কশপ থেকে কলাগাছের বাকল থেতলে আঁশ সংগ্রহের মেশিন বানিয়েছেন। বৈদ্যুতিক মোটরে চলছে সেই মেশিন। ৩ জন নারী শ্রমিক ৪ হাজার টাকা মাসিক বেতনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করছেন। কলাগাছ থেকে বাকল ছাড়াচ্ছেন অর্চনা দাস, সেই বাকল মেশিনে থেঁতলে আঁশ বের করছেন আমেনা খাতুন, সেই বাকল পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকাচ্ছেন চায়না দাস। এরপর ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানিতে ডুবিয়ে আবার হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ও সফনোর মিশ্রিত দ্রবণে ডুবিয়ে ফের রোদে শুকানো হচ্ছে। এরপর সেটা মোল্ডিং মেশিনে দিয়ে প্রথমে তুলা ও পরে স্পিনিং মেশিনে দিয়ে সুতা উৎপান করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পে কয়েক মণ আঁশ উৎপাদিত হয়েছে।

ভারতের বাজারে এ আঁশের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফট কোম্পানি প্রতি কেজি বাকল ১৭০-৩০০ টাকায় কিনে নিচ্ছে বলে জানান উদ্যোক্তা শাহেদ।

তিনি বলেন, এ ফাইবার প্রাকৃতিক ও উন্নতমানের। ব্যাগ, জুতা, শো-পিস, কাপড় তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। মোল্ডিং ও স্পিনিং মেশিন বসাতে পারলে আমরা সুতা উৎপাদনে যেতে পারবো। যেহেতু আমাদের জেলায় কলা চাষ বেশি হয় তাই কাঁচামাল অনেক। এ খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলে কলাগাছের আঁশের সুতার একটি বিশাল বাজার গড়ে তোলা সম্ভব। এ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে।

একেএম শাহেদুল হক ও ওসমান বিশ্বাস জানান, এ প্রকল্পে মেশিন তৈরিতে ৮০ হাজার টাকা, শেড তৈরি, মোটর স্থাপন ও শ্রমিকদের বেতন বাবদ ৪ লাখের মতো বিনিয়োগ করেছেন তারা। এখন ভাবছেন মোল্ডিং মেশিনের মাধ্যমে সুতা তৈরি করে বিদেশে রফতানি করতে। এ প্রক্রিয়ায় যেতে ৫০ লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করতে হবে। বর্তমানে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এ দুই উদ্যোক্তা।

ঝিনাইদহ সদরের ইউএনও এস এম শাহীন বলেন, কলাগাছের আঁশ থেকে সুতা তৈরি নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। আমরা সরেজমিনে প্রকল্পটি দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। আশা করি, দুই উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারবো।