বিশ্ব খাদ্য দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২১ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মানুষ এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে খাদ্যের অধিকার নিয়ে। আর এ অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের প্রতিটি দেশ নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে তা বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে। 

আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস।  ১৯৭৯ সালে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন) ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. প্যাল রোমানি বিশ্বব্যাপী এই দিনটি উদযাপনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৮১ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকতা আর প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন শুরু হয়। ১৯৪৫ সনের ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা FAO (Food and Agricultural Organisation) প্রতিষ্ঠিত হয়।  সে তারিখ অনুযায়ী বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য - ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’। 

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। 

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, জাতির পিতার পথ ধরেই গ্রামীণ ও কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সরকার গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বে পাট ও কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ে  মৎস্য উৎপাদনে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার  মেট্রিক টন হয়েছে।

এদিকে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনাকালে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ফলে করোনাকালেও দেশে খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রয়েছে ও তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমান বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি টনেরও বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত বছরের তুলনায় এ বছর সকল ফসলের উৎপাদনই বেশি হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে জানান হয়, দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরতে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসের প্রথম ভাগে সকালে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রতিপাদ্যের উপর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তার অংশ হিসেবে এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ অবমুক্ত করবেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ দিয়ে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উন্মোচন করবেন।

অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে আন্তর্জাতিক সেমিনারের পর বিকালে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে একটি কারিগরি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষিমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। সেখানে দেশে বিদেশের কৃষি ও খাদ্য বিষয়ে প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করবেন।