ময়মনসিংহে চামড়ার পরিস্থিতি ভিন্ন

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১০:৩২ এএম, ২২ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগ্রহীত

ছবি: সংগ্রহীত

গত কয়েক বছর দাম না পাওয়ায় অনেকেই খালে কিংবা বিলে চামড়া ফেলে দিয়েছেন। তবে এবার কিছুটা ভিন্ন পরিস্থিতি ময়মনসিংহে। প্রতিটি চামড়ায় এবার এক থেকে দেড়শ’ টাকা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে চামড়া নষ্ট হয়নি, বেড়েছে বেচা-কেনা। এদিকে চামড়া পরিষ্কারের কাজে ভালো মজুরি পেয়ে খুশি হতদরিদ্র শ্রমিকরাও। 

বুধবার (২১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে মহানগরীর চামড়াগুদাম এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বেপারিদের আড়তের সামনে শত শত চামড়া ফেলে কয়েকশ’ শ্রমিক পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

চামড়া বেপারি শামসুল হক জানান, গতবার চামড়া কিনে ঢাকায় পাঠিয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার দাম কিছুটা ভালো হওয়ায় চামড়ার চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। চামড়াগুদাম এলাকায় বড় ধরণের ছয় জন আড়তদার বেপারি আছেন। কোরবানির দিন আড়তদাররা আশপাশের মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের থেকে চামড়া কিনেন। ফড়িয়ারা গ্রাম থেকে চামড়া কিনে ট্রাকে করে নিয়ে আসে। 

তিনি আরও জানান, গতবার যে চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন, এবার দাম বেড়ে সেই চামড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনছেন। গতবারের প্রায় দ্বিগুণ দামেই চামড়া কিনছেন তারা। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলেই একটু বেশি দামে চামড়া কিনেছেন বলে জানান এ পাইকার।

চামড়া বেপারি মোহাম্মদ আলী জানান, গতবার চামড়া কিনে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হয়। এবার গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি দামেই চামড়া কিনছেন তারা। 

তিনি আরও জানান, কোরবানির সময় মহানগরীর চামড়াগুদাম এলাকা থেকে ১৮ থেকে ২০ হাজার চামড়া ঢাকায় ট্যানারি মালিকদের কাছে যায়। তবে ট্যানারি মালিকরা বাকিতে চামড়া নিয়ে পরে টাকা ঠিকমতো পরিশোধ না করায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি এখনও কয়েকজন ট্যানারি মালিকের কাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পান বলে জানান তিনি।

চামড়াগুদাম আড়ত ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, গতবার চামড়ার দাম কম থাকায় কোরবানি দাতারা বিক্রি না করে চামড়া খালে-বিলে ফেলে দিয়েছেন। তবে এবার দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। আড়তদার বেপারিরা ফড়িয়াদের থেকে চামড়া কিনছেন। এবার প্রক্রিয়া শেষে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশাবাদী তিনি।

এদিকে চামড়াগুদাম এলাকায় চামড়া পরিষ্কার এবং প্রক্রিয়া কাজ করতে প্রায় ৫০০ হতদরিদ্র শ্রমিকদের দেখা গেছে। 

শ্রমিক তালেব আলী (৩৫) জানান, করোনার কারণে কাজকর্ম তেমন একটা নাই। কোরবানির চামড়া পরিষ্কারের কাজ করে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যাবে। 

এটি খুবই কষ্টের কাজ জানিয়ে তিনি বলেন, অবশ্য ভালো মজুরিও পাওয়া যায়। প্রতি ঘণ্টা হিসেবে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মজুরি দেন আড়তদাররা। এই হিসাবে প্রত্যেক শ্রমিক দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে বলে জানান তিনি।