বিএনপির সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ব্যানারেও ঠাঁই হয়নি খালেদার

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১১:৫৩ এএম, ৩ মার্চ ২০২১ বুধবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

যত দিন যাচ্ছে ততই যেন অবহেলিত হচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আবারও পাওয়া গেলো তার প্রমাণ। সোমবার (১ মার্চ) দুপুরে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় অনুষ্ঠানমালার ব্যানারে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম থাকলেও তাই ছিল না তার নাম। এ নিয়ে দলের ভেতর গুঞ্জন চাউর হয়েছে, খালেদার দিন ও গুরুত্ব দুই-ই ফুরিয়েছে। আর এর নেপথ্য খলনায়ক আর কেউ নন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান। তিনি কৌশলে গর্ভধারিনী মাকে মাইনাস করে নিজেই সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করছেন, গড়েছেন নিজের আলাদা এক সাম্রাজ্য।

দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, দলীয় চেয়ারপারসন হিসেবে খালেদা জিয়াকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় অনুষ্ঠানমালা সম্পর্কে সেভাবে অবহিত করা হয়নি। এমনকি শেষ মুহুর্তে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল নেত্রীর বাসভবন ‘ফিরোজা’তে গেলেও তারেক রহমানের চাপে সবিশদ কিছু বলতে পারেননি। কুশল বিনিময়ের পর অন্য বিষয়ে কথা বলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে খালেদা সোমবার (১ মার্চ) রাতে ব্যানারে তার ছবি না থাকার বিষয়ে জানতে পারেন এবং মনে কষ্ট পান।

খালেদার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় খালেদা জিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কারণ বর্তমানে নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকলেও পরবর্তী দলীয় কাউন্সিল না হওয়া অবধি চেয়ারপারসন হিসেবে তো তিনিই বহাল রয়েছেন। তাই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় অনুষ্ঠানমালার ব্যানারে তার ছবি না থাকাটা শুধু দুঃখজনকই নয়, এটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। যে বা যারা এটি করেছে, তাদের সঙ্গেও যে পরবর্তীতে এমনটা হবেনা, তার কী গ্যারান্টি! সেই সঙ্গে আরেকটা কথা মনে রাখা দরকার, খালেদার নেতৃত্বেই বিএনপি আজ এতোদূর এসেছে। তাই তাকে উপেক্ষা করার দুঃসাহস তারা কোথায় পায়? এর জবাব, পরবর্তী প্রজন্মই দেবে। যেটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

বাংলা নিউজ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপনে এ ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, যা হয়েছে কিংবা হচ্ছে সব তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ীই হচ্ছে। কারণ, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পরিবর্তে তিনিই এখন দলের সর্বেসর্বা। তার নির্দেশ উপেক্ষা করার সাধ্যি কার! আমরা সবাই তার কথামতই চলছি। এমনকি রোববার (১ মার্চ) রাতে বোতাম টিপে দলীয় কার্যালয়ের সাজসজ্জা ও চিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচির উদ্বোধনও যে আমি করেছি, তা তার ইশারাতেই করেছি। তবে হ্যাঁ, ব্যানারে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) ছবি থাকাটা উচিত ছিল। কারণ, তিনি এখনও দলীয় চেয়ারপারসনের চলতি দায়িত্বে রয়েছেন।

এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, নিজের পেটের ছেলে এমনটা করবে, তা খালেদা কেন- কোন মা-ই প্রত্যাশা করবে না। যেটা তার ক্ষেত্রে হয়েছে। তবে তারেককেও এটা মনে রাখা উচিত, তার সঙ্গেও পরবর্তী প্রজন্ম এমনটা করতে পারে। তাই সময় থাকতে তারও শুধরে যাওয়া উচিত। নইলে নিজেই নিজের ফাঁদে ধরা খেয়ে দলীয় ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে সে। কারণ, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। আর এটাই অদ্বিতীয় সত্যি।