যাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব, জেনে নিন তাদের পরিচয়
নিউজ ডেস্ক
যাদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব, জেনে নিন তাদের পরিচয়
হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। মহানবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে তার তিন কন্যাকে আশ্রয় দান করে, সব ব্যয়ভার বহন করে এবং তাদের সঙ্গে দয়াসুলভ আচরণ করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। উপস্থিত জনতার মধ্য হতে একজন প্রশ্ন করল, যদি কারো দুটি কন্যা সন্তান হয় ইয়া রাসূলুল্লাহ! জবাবে তিনি বললেন, দুটি কন্যা হলেও।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৭৮)
উকবা ইবনে আমির রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে মুসলমান সুন্দররূপে অজু করে, তারপর দাঁড়িয়ে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করে দুই রাকাত সালাত আদায় করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, তাহারাত অধ্যায়: ২৩৪)
আনাস ইবনে মালিক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি জানাজা বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লোকেরা প্রশংসা করলেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ওয়াজাবাত’ বললেন, অর্থাৎ ওয়াজিব হয়ে গেছে। অতঃপর দ্বিতীয় আর একটি জানাজা নিয়ে পার হলে লোকেরা তার দুর্নাম করতে লাগল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ওয়াজাবাত’। অর্থাৎ অবধারিত হয়ে গেল। উমার বিন খাত্ত্বাব রাদিআল্লাহু আনহু বললেন, কী অবধারিত হয়ে গেল? তিনি বললেন, ‘তোমরা যে এর প্রশংসা করলে তার জন্য জান্নাত, আর ওর দুর্নাম করলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেল। তোমরা হলে পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী।’ (বুখারি: ১৩৬৭, ২৬৪২ মুসলিম: ২২৪৩)
আবু সাঈদ আল খুদরী রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে বললেন, হে আবু সাঈদ! ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বিন হিসেবে এবং মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।’ (সহিহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ: ১৮৮৪)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি বলবে- আমি আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দ্বিন এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।’ (আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত: ১৫২৯)
ইবনে উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি বারো বছর আজান দেয়, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। আর প্রতি দিনের আজানের বিনিময়ে তার জন্য ষাট নেকি এবং প্রতি ইকামতের জন্য তিরিশ নেকি লেখা হয়।’ (ইবনে মাজাহ, কিতাবুল আজান:৭২৮)
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন- ‘কোনো মুসলমান মহামহিম আল্লাহর পথে একটি উষ্ট্রী দোহনের সময় পরিমাণ যুদ্ধ করলে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।’ (ইবনে মাজাহ, কিতাবুল জিহাদ: ২৭৯২)
শদ্দাদ ইবনে আওস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে শ্রেষ্ঠ ইস্তিগফারের সন্ধান দিব না? তা হলো- ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তো তোমারই বান্দা। আমি যথাসম্ভব তোমার সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার ও ওয়াদার উপর আছি। আমি তোমার পানাহ চাই আমার কৃতকর্মের অনিষ্ঠ থেকে। আমার প্রতি তোমার নিয়ামত আমি স্বীকার করছি। আমি আমার সব অপরাধও স্বীকার করছি। তুমি মাফ করে দাও আমার সব আপরাধ। তুমি ছাড়া গুনাহ মাফ করার তো কেউ নেই।’
তোমাদের কেউ যদি সন্ধ্যায় এটি পাঠ করে আর ভোরের আগেই যদি তাকদির অনুসারে তার মৃত্যু এসে যায়, তবে জান্নাত তার জন্য ওয়াজিব। অনুরুপ তোমাদের কেউ যদি সকালে এটি পাঠ করে আর সন্ধ্যার আগেই তাকদীর অনুসারে তার মৃত্যু এসে যায়, তবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।’ (তিরমিজি, দোয়া অধ্যায়: ৩৩৯৩)
আবু উমামা বিন সাহল বিন হুনাইফ (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘মানুষকে সুসংবাদ প্রদান করো। যে ব্যক্তি বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।’ (নাসাঈ আস সুনানুল কুবরা, কিতাব আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি: ১০৮৮৫)
এসব ভাগ্যবানদের একজন হিসেবে আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেককে কবুল করুন। আমিন।
- রাগ নিয়ন্ত্রণে ৪ আমল
- বন্যার্তদের অগ্রিম জাকাত দেওয়া যাবে কি?
- সুলাইমান আ.-কে যে বিস্ময়কর রাজত্ব দিয়েছিলেন আল্লাহ
- হজরত আদম ও মুসা আ.-এর মধ্যে যে কথোপকথন হয়েছিল
- বন্যার পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে কী?
- তাসবিহে ফাতেমির ফজিলত
- বন্যার্তদের সাহায্য করা বড় সওয়াবের কাজ
- হাউজে কাউসারে প্রিয়নবী সা.-এর সঙ্গী হবেন যিনি
- সূরা নিসার যে আয়াতে একসঙ্গে ১২ জন নবীর কথা বর্ণিত হয়েছে
- নামাজে দৃষ্টি কখন কোথায় রাখতে হবে?